কমলকৃষ্ণ দে ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল : অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) জামিন চেয়ে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি-চিঠিকাণ্ডে গ্রেফতার বর্ধমানের আইনজীবী সুদীপ্ত রায়। রাতে ধৃত আইনজীবীর বড়নীলপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতের বাড়ি থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এর আগে মেমারির রসুলপুর থেকেও এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। অন্যদিকে, ধৃত আইনজীবীকে আজ আসানসোলের এসিজেএম আদালতে তোলা হবে।


পুলিশের দাবি, বর্ধমান এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হেড ক্লার্ক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে বিবাদ ছিল আইনজীবী সুদীপ্ত রায়ের। তার জেরেই বাপ্পার নামে তিনি আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের (Asansol CBI Court) বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে হুমকি-চিঠি পাঠান। 


হুমকি চিঠিতে মাদক কেসে ফাঁসানোর হুমকি


গত ২০ অগাস্ট আসানসোলের বিশেষ সিবিআই (CBI) আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর উদ্দেশে হুমকি চিঠি পাঠানো হয়। যাতে লেখা ছিল ‘অনুব্রতকে জামিন না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসানো হবে বিচারকের পরিবারকে’। পাশাপাশি চিঠিতে সই ছিল জনৈক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের। যে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন বর্ধমান এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হেড ক্লার্ক। বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক যদিও গোটা ঘটনা ডিস্ট্রিক্ট্র চিফ জাজকে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন। বিচারকের চিঠির একটি প্রতিলিপি এসে পৌঁছয় কলকাতা হাইকোর্টেও। যার পরই শুরু হয় তদন্ত। যাঁর নাম সামনে রেখে হুমকি, সেই অনুব্রত মণ্ডলও প্রথমে 'বিজেপির চক্রান্ত' জানিয়ে পরে শুনানির মাঝে বিচারককে গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেন।



গ্রেফতার অনুব্রত


গত ১১ অগাস্ট  গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই সূত্রে খবর, ফৌজদারি দণ্ডবিধির 41A ধারায় গরুপাচার মামলায় সরাসরি অভিযুক্ত করা হয়  বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। তার আগের দিন সিবিআই-এর হাজিরা এড়ানোর পরদিন আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে বোলপুরের নীচুপট্টিতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বাড়ির সকলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। তল্লাশির পাশাপাশি, দোতলার ঘরে অনুব্রতকে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। এরপর গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। আর এদিন আসানসোলে জেলে থাকা অনুব্রতকে জেরা করতে সেখানে গিয়েছে সিবিআই।


আরও পড়ুন- কয়লা পাচারকাণ্ডে ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমন পাঠাল ইডি