প্রকাশ সিনহা ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুর : আজই কি গ্রেফতার হবেন অনুব্রত মণ্ডল  (Anubrata Mandal) ? সরকারিভাবে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য না রাখা হলেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাকারী সংস্থার একাধিক পদক্ষেপে তেমনই ইঙ্গিত। তবে অনুব্রত মণ্ডল কি আদৌ তাঁর বাড়িতে রয়েছেন? সকাল থেকে এখনও তাঁকে দেওয়া যায়নি।


সকাল থেকেই গরুপাচার মামলায় তৎপর হয়েছে সিবিআই (CBI)। গরু পাচার মামলায় গতকাল অনুব্রত মণ্ডল দশমবার হাজিরা এড়ানোর পর আজ সকালে বোলপুরের নীচুপট্টিতে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হানা। ১০-১২টি গাড়ির কনভয় নিয়ে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তদন্তকারী অফিসার রাজীব মিশ্র-র নেতৃত্বে সিবিআইয়ের দল পৌঁছয় অনুব্রত-র বাড়িতে। মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকে একাধিক তথ্য, সব সঙ্গে নিয়েই হাজির হন তারা।


বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। তৃণমূল নেতার ব্যক্তিগত রক্ষীদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে বাড়ির বাইরে বের করে দেওয়া হয় তাঁদের। গরুপাচার মামলায় ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই। মাত্র একবার হাজিরা দেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। 


সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি অনুব্রত মণ্ডলের যোগ মিলেছে। তাঁদের থেকে টাকাও অনুব্রত পেতেন বলেই দাবি করেছেন সিবিআইয়েক তদন্তকারী অফিসাররা। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে (Saigal Hossain) গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তিনি রয়েছেন হেফাজতে। তার সঙ্গে অনুব্রত-র যোগাযোগ থেকে শুরু করে সম্প্রতি দাখিল করা চার্জশিট, সবেতেই অনুব্রত মণ্ডলের নাম রেখেছেন তদন্তকারী অফিসাররা।


সিবিআই সূত্রে খবর, গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। আজ ওই চিকিত্সকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিৎসককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিত্সক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই। খবর সূত্রের। 


আরও পড়ুন- 'দাদার জন্য দুঃখ হচ্ছে', অনুব্রতর বাড়িতে সিবিআই হানায় প্রতিক্রিয়া এলাকাবাসীর


এদিকে এলাকায় এমন কেন্দ্রীয় বাহিনীর আচমকা হানা এবং সিবিআই আধিকারিকদের চলে আসায় রীতিমতো উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন কী হয়েছে তা দেখতে। অনেকে ছবি তুলছেন। এক বাসিন্দা জানান, বাজার করতে বেড়িয়েছিলাম হঠাৎ দেখলাম ভিড়। সংবাদমাধ্যমও এসেছে তাই দাঁড়িয়ে গেলাম। আরেক বাসিন্দা বলেন, "দাদার জন্যই এসেছি এখানে। আমরা অনেক দিনের বাসিন্দা। দাদার জন্য আমাদের দুঃখ, কষ্ট হচ্ছে।"