কলকাতা: আজ ফের অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) মেডিক্যাল টেস্ট করানো হবে। বেলা ১২টা নাগাদ নিয়ে যাওয়া হল আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে (Alipur Command Hospital)। সেখানে মেডিক্যাল পরীক্ষার পর ফিরিয়ে এনে আজ ফের জেরা করা হবে অনুব্রতকে। খবর সিবিআই (CBI) সূত্রে। আদালতের নির্দেশেই ৪৮ ঘণ্টা অন্তর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হচ্ছে অনুব্রতর। উল্লেখ্য, এর আগেরবার বেশ কিছু মন্তব্য করলেও আজ কিছুই বলেননি তিনি।
আরও একটি রাইস মিলের হদিশ: গরুপাচার মামলার (Cow Smuggling Case) তদন্তে এবার সিবিআইয়ের নজরে বোলপুরের (Bolpur) আরও একটি রাইস মিল। সোমবার বাঁধগোড়া এলাকায় শিবশম্ভু রাইস মিলে হানা দেন সিবিআই অফিসাররা।চালকলের গেটের ফলকে জে বি পাল ও ডি ডি পালের নাম। ফোন নম্বর দেওয়া থাকলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সিবিআই সূত্রে দাবি, ভোলে ব্যোম রাইস মিলে অভিযান চালিয়ে বীরভূমে ছোট-বড় আরও চালকল সংক্রান্ত নথি মেলে। সেই সূত্রেই এদিন শিবশম্ভু রাইস মিলে হানা দেয় সিবিআই। স্থানীয়দের দাবি, ভোলে ব্যোমের মতো শিবশম্ভু রাইস মিলেও দীর্ঘদিন উত্পাদন বন্ধ। কিন্তু লোকজনের যাতায়াত ছিল।
সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১৪-’১৫, এই একবছরে রকেট-গতিতে বেড়েছে অনুব্রত মণ্ডলের পরিবারের আয়। ২০১৫-’১৮, এই ৩ বছরে অনুব্রতর নামে-বেনামে বীরভূম ও কলকাতায় কোটি কোটি টাকায় বিপুল সম্পত্তি কেনা হয়েছে। গরুপাচার মামলায় আদালতে জমা দেওয়া সিবিআই রিপোর্টে দাবি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে দাবি করেছে, চালকল, স্টোন ক্রাশার, জমি, বাড়ি, হোটেল-সহ প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রতর পরিবার ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে। যা গরুপাচারের কমিশনের টাকায় কেনা হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান।
নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট: গরুপাচারের টাকা নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে বলে অনুমান সিবিআইয়ের। এবার তাদের স্ক্যানারে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৭টি ব্যাঙ্কের ১৮টি অ্যাকাউন্ট। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রত, তাঁর মেয়ে সুকন্যা ছাড়াও আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে-বেনামে একাধিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই সমস্ত অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্য়েই বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই সমস্ত সম্পত্তির মূলে গরুপাচারের টাকার লেনদেন। সেই সূত্রেই উঠে এসেছে অনুব্রত মণ্ডলের নাম। সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রতর একার নামে, তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের নামেও রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। বোলপুরের নীচুপট্টি এলাকায় নিজের বাড়ি ছাড়াও একাধিক চাল কল, রিয়েল এস্টেট সংস্থা ও কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনুব্রতর স্ত্রী, কন্যা, এমনকি ঘনিষ্ঠদের নাম।
বোলপুরে রয়েছে ফার্ম হাউস। শুধু তাই নয়, হাটসেরান্দি গ্রামে অনুব্রতর নিজের প্রাসাদোপম পৈতৃক বাড়ি ছাড়াও বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ, বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েনের তিন-তিনটি বাড়ি ও একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অনুব্রত ও তাঁর পরিবারের নামে মিলেছে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, দাবি সিবিআইয়ের। এই সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির আয়ের উত্স কী, আপাতত সেদিকেই নজর সিবিআইয়ের।