হিন্দোল দে ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিবাদের জেরে নারকেলডাঙায় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে লাথি মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ও কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার অনুগতদের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত যুবতীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত বিধায়ক ও কাউন্সিলর অবশ্য সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।


কী অভিযোগ? 
নারকেলডাঙার বাসিন্দা শিবশঙ্কর দাস ও তাঁর ছেলে দীপক দাসের অভিযোগ, প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের দেখা করতে ডেকেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও বিধায়ক পরেশ পাল। সে জন্য তাঁদের 'ছেলেরা' এসে 'তলব' করে যায়, দাবি শিবশঙ্করের। কিন্তু বাবা বা ছেলে কেউই যেতে রাজি হননি। এর পরই তাণ্ডব। অভিযোগ, জনা দুশো ছেলে এসে আচমকাই তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। বেধড়ক মারধর করা হয় দীপককে। কোনও মতে প্রাণ বাঁচিয়ে তিনি নারকেলডাঙা থানায় যান। কিন্তু সেখানে আরও সমস্যা অপেক্ষা করে ছিল বলে দাবি শিবশঙ্কর-দীপকের। তাঁদের বক্তব্য, থানায় অভিযোগ তো নেওয়া হয়নি। উল্টে  তাঁদের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শিয়ালদহ আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরলে দেখেন তাণ্ডব হয়ে গিয়েছে। দীপকের দাবি, তাঁর ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে লাথি মেরেছে হামলাকারীরা যার জেরে তাঁর অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। মারধর করা হয়েছে বাড়ির শিশুদেরও। দীপকের মা ও আক্রান্তের শাশুড়ির এখনও 'শক' সামলে উঠতে পারেননি। বলছেন, টাকাপয়সাও লুঠ করা হয়েছে। সব কিছু ভাঙচুর করে দিয়েছে হামলাকারীরা। গোটা ঘটনায় অভিযোগের দিকে তৃণমূল বিধায়ক ও কাউন্সিলরের দিকে।


কী বলছে তৃণমূল?
সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত বিধায়ক। বললেন, 'শিবশঙ্কর দাস নামে কাউকে চিনি না, কাউকে ডাকিনিও। এক জন বিধায়কের পক্ষ সব ওয়ার্ডের খোঁজ রাখা সম্ভব নয়।... আর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডটা আমি দেখি না। স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া দাস বিশ্বাস দেখেন।... যারা মেরেছে, তাদের গ্রেফতার করুক পুলিশ।' অন্য অভিযুক্ত, কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দারের আবার দাবি,'ওই ভদ্রলোক সম্পূর্ণ মিথ্যে তত্ত্ব খাঁড়া করেছেন। ২৫ বছর ধরে এই জিনিস দেখে আসছি। পাড়ায় গিয়ে দেখে আসুন। আর আমরা এ জন্য কাউকে পার্টি অফিসে ডাকি না। তবে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের মধ্য়ে কোনও গণ্ডগোল হয়ে থাকলে বা শরিকি গণ্ডগোল হয়ে থাকলে পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।' কিন্তু পুলিশই তো অভিযোগের নিশানায়?  ডিসি (ইএসডি) প্রিয়ব্রত রায়ের বক্তব্য, ‘এ ধরনের কোনও অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেনি। যদি কেউ অভিযোগ করেন, অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা হবে।’ পুলিশের তরফে পরে জানানো হয়, বাবা-ছেলেকে পুরনো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও অভিযোগকারীদের দাবি, তাঁরা বিজেপি করাতেই এই হেনস্থা। গোটা ঘটনায় সরব পদ্মশিবির।


আরও পড়ুন:শুভেন্দু-গড় নন্দীগ্রামে সমবায় ভোটে খাতাই খুলতে পারল না বিজেপি