কলকাতা: অর্জুন সিংকে দল বাড়াবার জন্য আনা হয়েছিল। সব তো পালিয়ে গেল। উনিও শেষে পালিয়ে গেলেন। সেন্সর-ইস্যুতে অর্জুন সিংয়ের কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিলেন দিলীপ ঘোষ। মন্তব্য থেকে তাঁকে বিরত থাকার পরামর্শের পরও নিজের মেজাজে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সহ সভাপতি কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের অবস্থানে অনড়। আর সহানুভূতির মোড়কে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। 


অব্যাহত বিতর্ক: বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে সতীর্থদের সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে দিলীপ ঘোষকে কার্যত সেন্সর করেছে বিজেপি (BJP)। পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) কিংবা অন্য যে কোনও জায়গায়, সংবাদমাধ্যম এবং নাগরিক মঞ্চে দলীয় সহকর্মীদের সম্পর্কে মন্তব্য থেকে তাঁকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


যা নিয়েও বিতর্ক অব্যাহত। দিলীপ ঘোষ অবশ্য কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের অবস্থানে অনড়। দিলীপ ঘোষকে বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কার্যত সেন্সর করার বিষয়টা নিয়ে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে তৃণমূল। ফের সহানুভূতির মোড়কেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তারা। 


কুণাল ঘোষের বক্তব্য: এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের  রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, দিলীপ ঘোষ আক্রমণ করছেন, আসলে তৃণমূলকে (TMC) নয়, যাঁরা মুখে কুলুপ আটকাতে চাইছেন, তাদের বলেছেন, দিলীপবাবু দলকেই বার্তা দিচ্ছেন, আমাকে আটকে রাখা যাবে না।


মঙ্গলবারই সামনে এসেছিল, দিলীপ ঘোষের উদ্দেশে লেখা, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংয়ের লেখা চিঠি। যেখানে লেখা হয়, আপনার কিছু বিবৃতি এবং বিস্ফোরক মন্তব্যে রাজ্য নেতারা ক্ষুব্ধ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিব্রত। আপনি সতর্ক হবেন, এই আশায়, বিজেপি নেতৃত্ব একাধিকবার আপনাকে বিষয়টি জানিয়েছে। 


সম্প্রতি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে এবং অন্যান্য  মঞ্চে আপনি খোলাখুলি রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করেছেন। এতে দলের ক্ষতি হবে এবং আপনার অতীতের পরিশ্রমই বিফলে যাবে। দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পদে থাকা নেতার এ ধরনের মন্তব্যে দলের মধ্যেই অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। 


বাবুল সুপ্রিয় ও দিলীপের সম্পর্ক: বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) বিজেপিতে থাকাকালীন, তাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সম্পর্কের শৈত্য বারবারই সামনে আসত। এখন বাবুল তৃণমূলে। দিলীপ ঘোষকে বিজেপি সেন্সর করতেই তা নিয়ে কটাক্ষ করেন বাবুল। তিনি ট্যুইটারে লেখেন, 'পরশুদিনই লিখেছিলাম যে শ্রী দিলীপ ঘোষ Verbal Diarrhoea-র রোগী। তাঁর কোনও লজ্জা নাই, চিকিৎসাও নাই। বেশ চলছিল রোজ ভোরবেলা বাণীর-প্রাতঃকৃত্য - সারাদিন মানুষ তাতে দুদণ্ড হাসির খোরাক পেত। চিঠি দিয়ে 'রগড়ে' দিয়ে সেটাও বন্ধ করে দিল। অবশ্য এমনিতেও আন্দামানে পাচার-order হয়েছিল'।


যদিও, বাবুলের কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। এই ইস্যুতে তৃণমূল-বিজেপিকে একসারিতে ফেলে কটাক্ষ করেছে সিপিএম-কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, একদিকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে জয়েন করাচ্ছে, একদিকে দলের লোকের কথা বন্ধ করে দিচ্ছে, এভাবে বিজেপি কার্যত তৃণমূলকেই সুবিধা করে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে, সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার জেরে, দিলীপ ঘোষকে বিজেপির সেন্সর করা নিয়ে, সরগরম রাজ্য রাজনীতি।