ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) গরহাজিরায় বীরভূমে (Birbhum News) তৃণমূলের (TMC) অন্দরে ফাটল কি চওড়া হচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে ক্রমশ জোাল হচ্ছে এই প্রশ্ন। কারণ কালীঘাটে তৃণমূলনেত্রীর বীরভূম-বৈঠকের দিনই লালমাটির জেলা থেকে উঠে এল দলের ছন্নছাড়া ছবি। তা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। 


গরুপাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডল এখনও জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে বহাল


পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। কিন্তু তৃণমূলের বৈতরণী পার করতে বীরভূমে নেই অনুব্রত। গরুপাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডল এখনও জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর ঠাঁই হয়েছে সুদূর তিহাড় জেলে। আর সেই আবহেই অনুব্রতহীন বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল স্থির করতে, শুক্রবার জেলার নেতাদের নিয়ে কালীঘাটে সাংগঠনিক বৈঠক করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আর সেই বৈঠককে ঘিরেই লাল মাটির জেলা থেকে উঠে এল ঘাসফুল শিবিরের ছন্নছাড়া ছবি। অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের অন্দরে স্পষ্টতই ফাটল ধরেছে। বেসুরো হয়েছেন শাসকদলের একাধিক নেতা। নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাজির বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দলীয় নেতৃত্বেরই সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।


ওই ভিডিও-য় বিধানচন্দ্রকে বলতে শোনা যায়, "হয়ত বিগত দিনে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সংগঠন বা ক্ষনতাকে কুক্ষিগত করে রেখে দিয়েছিলেন। মানুষের মধ্যে বিকেন্দ্রীকরণ করেননি ক্ষমতা। আমরা চাই, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ, যাঁরা তৃণমূলকে ভালবাসেন, তাঁরা এগিয়ে আসুন।" নাম না করে কি আসলে অনুব্রতকেই নিশানা করেছেন নানুরের তৃণমূল বিধায়ক? ভাইরাল বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা।


আরও পড়ুন: Civic Volunteers: কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নয়, সিভিক ভলান্টিয়ারে কড়া রাজ্য, এল নির্দেশিকা

শুধু তাই নয়, অনুব্রতহীন বীরভূমে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেখভালের জন্য যে পাঁচ জনের কোর কমিটি গড়ে দেন তৃণমূলনেত্রী, সেই কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখকেও ফেসবুক লাইভে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, "আপনাদের মধ্যে কয়েক জন আছেন, যাঁরা দলটাকে লুটেপুটে খাওয়ার জায়গা ভেবে নিয়েছেন... বীরভূম জেলা থেকে সরাব। "

অন্য দিকে, নলহাটির তৃণমূল বিধায়কের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে দলীয় পদ ছেড়েছেন নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বাউটিয়া অঞ্চলের সভাপতি মৃগাঙ্ক মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, "আমি চিঠি দিয়ে বলেছি, অব্যাহতি দেওয়া হোক। এমএলএ সাহেব সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, আমি বিজেপি-র হয়ে ভোট করেছি। মিথ্যে কথা বলছেন। জানি না দলটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাবছেন কিনা।"


তৃণমূলের এই সংঘাতের খবরে স্বভাবতই কটাক্ষ করেছে বিজেপি

কেষ্টহীন বীরভূমে তৃণমূল বনাম তৃণমূলের এই সংঘাতের খবরে স্বভাবতই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। লাল মাটির জেলায় ঘাসফুলের শিকড় মজবুত রাখতে দলীয় নেতৃত্ব কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন, সেটাই দেখার।