কলকাতা: দুর্নীতিকাণ্ডে একের পর এক নেতার নাম জড়াতে শুরু করলে 'চোর', 'চোর' রব ওঠে চারিদিকে। সেই আবহে সাংবাদিক বৈঠক করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। কয়েক জন নেতার জন্য গোটা দলকে কেন 'চোর' বলা হচ্ছে, প্রশ্ন তুলেছিলেন। আগ বাড়িয়ে সেই সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে তখনই প্রশ্ন উঠেছিল। একবার ফের তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্নের মুখে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্য়ের মন্ত্র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। নারদ মামলা (Narada Case) নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) একটি মন্তব্য়ের উল্লেখ শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। তাতে তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব তাঁর প্রতি ‘অসন্তুষ্ট’ বলে একটি সূত্রের খবর।
শুভেন্দু প্রসঙ্গে ফিরহাদের মন্তব্যে ‘অসন্তুষ্ট’ তৃণমূল!
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরুপাচার, হালফিলে বাংলায় সক্রিয়তা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সেই আবহে সম্প্রতি ফিরহাদকে নিশানা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "এখন দেখুন দু’জনের কম্পিটিশন চলছে। পার্থবাবু আর কেষ্টবাবুর। কী কম্পিটিশন? বার বার ডাক্তারখানায় যাচ্ছেন, বার বার হাসপাতালে যাচ্ছেন। এবার ডাক্তার হেকিমকে ভিতরে পাঠাতে হবে কি না?"
সেখানেই না থেমে সুকান্ত আরও বলেন, "তৃণমূলে একটা হেকিম আছে, জানেন তো? নাম কী? কী হাকিম?" জবাবে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বলতে শোনা যায়, "ফিরহাদ হাকিম।" তাতে সুকান্ত বলেন, "তাঁকেও রেডি হতে বলুন। তাঁকেও আমরা ভিতরে পাঠানোর ব্যবস্থা করব। তাহলে আর বাইরের হাসপাতালে আসতে হবে না। সেখানেই হেকিম সাহেব তাঁদের ট্রিটমেন্ট করতে পারবেন।"
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে, শুক্রবার ফিরহাদ বলেন, "আমার একটা কেস হয়েছিল। সেই জন্য আমি অ্যারেস্ট হয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতালে থাকিনি। জেলে ছিলাম। আদালত বলেছিল, জেলে থাকতে, তাই জেলেই ছিলাম। সেই কেসের ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন। এটা নিয়ে আর রিপিট করব না।"
নারদ কাণ্ড নিয়ে এর আগে মুখ খোলেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য ছিল, "নারদকাণ্ড ষড়যন্ত্র, কোনও অপরাধ নয়।" শুভেন্দুর সেই মন্তব্যের দিকেই ফিরহাদের ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তিনি শুভেন্দুর নাম নেওয়ায়, দলের একটি অংশ তাঁর উপর অসন্তুষ্ট বলে শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "যিনি বলেছেন, তিনিই এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। এ বিষয়ে দল কোনও মন্তব্য করবে না।"
এ বিষয়ে দল কোনও মন্তব্য করবে না, বললেন কুণাল
যদিও রাজ্য়ের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর যুক্তি, "কারও বাড়িতে ইডি, সিবিআই গেলেই চোর বলার সময় আসেনি। তদন্ত চলছে। বিচার ব্য়বস্থার উপর আস্থা আছে দলের। তদন্তে যা বেরোবে, আদাল যা রায় দেবে, তাকেই স্বাগত জানাবে দল।" অনুব্রত-সহ ধৃতদের থেকে দূরত্ব তৈরির প্রসঙ্গে স্নেহাশিস জানান, বিচারব্যবস্থা যাতে প্রভাবিত না হয়, তার জন্য়ই এমন সিদ্ধান্ত।