কলকাতা: কটাক্ষ, বিদ্রুপ উড়ে এসেছে আগেও। তাও কলম থামাননি তিনি। বরং সহজ-সরল ভাষা, যা ছোট থেকে বড় সকলের বুঝতে সুবিধা, তেমন লেখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তবে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কবিতা লেখার ধরন নিয়ে কটাক্ষ করতে শোনা গেল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly)। নাম না করে মমতার কবিতা এপাং-ওপাং-ঝপাং নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। কবিতাটিকে ‘অখাদ্য’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবেই এমন কবিতা লেখেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা (Mamata Banerjee Poems)।
ইচ্ছাকৃত ভাবেই এমন কবিতা লেখেন, জানিয়েছিলেন মমতা
গতবছরের মাঝামাঝি নিজের লেখা কবিতার গুণগত মান নিয়ে সমালোচনার জবাব দিয়েছিলেন মমতা খোদই। সেই সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ভাল চিন্তা মানুষকে বিকশিত করে। আমি যখন ছোট ছিলাম, ছোট ছোট কবিতা পড়তাম, 'আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেব মেপে', ‘কাঠবেড়ালি কাঠবেড়ালি,' এ সব নিয়ে কেউ কখনও প্রশ্ন করেনি। এখন দেখি, এরা কোন গ্রুপ জানি না। হয়ত সমাজের বড় অংশ হবেন। তাঁদের সম্মান করি। তবে ভাবতে বলব। আপনি যখন বাচ্চার জন্য কিছু তৈরি করবেন, তখন আপনাকেও প্রথমে বাচ্চা সাজতে হবে। মনটা হতে হবে বাচ্চার মতো। তবেই বাচ্চাকে তার মতো করে শিক্ষা দিতে পারবেন।”
শুধুমাত্র কবিতা নয়, নানা ধরনের লেখালেখি করেন মমতা। তাঁর লেখা বইয়ের বিক্রিও যে ভাল, সে কথাও অকপটে স্বীকার করে নেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে তাঁর লেখার ধরন নিয়ে কম ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ হয় না। তাঁর লেখায় শব্দচয়ন থেকে, ছন্দ, তাল নিয়ে নানা ধরনের মিমে প্রায়শই ছেয়ে যায় নেট দুনিয়া। কিন্তু মমতার সাফ কথা, “ছোটদের জন্য কবিতা লিখতে হলে, ছোট হয়ে যেতে হয়।”
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'হরে করে কমবা', 'আজব ছড়া'র ব্যাখ্যা করলেন মমতা, ভাবা প্র্যাকটিস করতে বললেন
সমালোচকদের উদ্দেশে মমতার বক্তব্য ছিল, "কেউ কেউ পুরোটা না দেখে চিৎকার শুরু করে দেয়, একেবারে হরে করে কমবার মতো। আমি বলেল আবার বলবে, দেখেছেন! হরে করে কমবার আবার কোনও মানে হয় নাকি! নিশ্চয়ই হয়। পুরনো কবিতার বইগুলি দেখে নিন। আগেকার দিনের বইগুলিতে চোখ রাখুন, অনেক কিছু দেখতে পাবেন।"
গতবছরই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাংলা অকাদেমি পুরস্কার পান মমতা
সাহিত্যচর্চার জন্য গতবছরই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাংলা অকাদেমি পুরস্কার পান মমতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও নিজে পুরস্কার নিতে যাননি তিনি। তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন ইন্দ্রনীল সেন। মমতাকে ওই পুরস্কার নিয়ে জোর তরজা শুরু হয়। সেই সময় তাঁকে বিদ্রুপ করতে 'আজব ছড়া' নামাঙ্কিত বই থেকে 'হরে করে কমবা' লাইনটি নিয়ে তুমুল বিদ্রূপ শুরু হয়। সেই সময় দলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য তাঁর হয়ে বিদ্রুপ সামাল দিতে এগিয়ে আসেন। অন্নদাশঙ্কর রায়ের 'পিং পিং, কালিম্পং' ছড়াটি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরে দেবাংশু যুক্তি দেন যে, মমতার লেখা বলেই এত বিদ্রূপ করা হচ্ছে। তবে এ বার খোদ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির মুখে মমতার লেখা নিয়ে কটাক্ষ শোনা গেল।