পার্থপ্রতিম ঘোষ ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল : ২৫ সেকেন্ডের নিখুঁত অপারেশন, ২ দিক দিয়ে গাড়ি ঘিরে শ্যুটআউট করে ফেরার ! শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের ধারে কয়ালা মাফিয়া রাজু ঝা খুনে পরতে পরতে রহস্য। থানার কাছে পরিত্যক্ত গাড়িতে উদ্ধার ২টি ৭ এমএম পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি মেলে। পরিত্যক্ত ব্যালেনো গাড়িতে মিলেছে ৫ টি নম্বর প্লেট, ৪ টিই ব্যালেনো গাড়ির ! জানাচ্ছে পুলিশ (Police)।


'শুধু নীল ব্যালেনো নয়, ২টি গাড়িতে ছিল আততায়ীরা, রাজু-লতিফের গাড়ির সঙ্গে আততায়ীদের গাড়ি, পিছনে আরও একটি গাড়ি', সম্ভবত ব্যাক আপ হিসেবে পিছনে ছিল আততায়ীদের আরেকটি গাড়ি। ২টি গাড়িতে ছিল রাজু ঝা, আব্দুল লতিফরা, আততায়ীদেরও ২টি গাড়ি ! রাজু ঝার গাড়ির গতিবিধি নিয়ে খবর আসছিল নির্দিষ্ট সূত্রে, অনুমান পুলিশের।


'শক্তিগড়ে ফরচুনা থামতেই ২ দিক দিয়ে ঘিরে রাজু ঝাকে এলোপাথাড়ি গুলি, ২জন ২দিক থেকে ঘিরে গুলি চালায়, গাড়িতে শুয়ে পড়ায় বেঁচে যায় ব্রতীন। পানাগড় টোল প্লাজা পেরিয়ে শক্তিগড়ে (Saktighar) দিকে আসছিল ব্যালেনো গাড়ি'। 'শক্তিগড় থানার কাছে ব্যারিয়ার, গাড়ি ঘুরিয়ে চম্পট দেয় আততায়ীরা', নিখুঁত ছক কষেই প্রফেশনাল কিলার দিয়ে হামলা, নিশ্চিত পুলিশ । 


এদিকে, 'রাজু ঝা-এর গাড়িতে লতিফ ছিল কি না তিনি জানেন না, লতিফকে তিনি চেনেন না', দাবি নিহত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-র সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্য়ায়ের। রাজু ঝা-এর সঙ্গে তাঁর দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক বলেও দাবি ব্রতীন মুখোপাধ্যায়ের।  গুলি চালানোর সময় তিনি গাড়ির বাইরে ছিলেন বলে দাবি ব্রতীনের। প্রথমে দুজন বললেও পরে ব্রতীন বলেন এক ব্যক্তিকে গুলি চালাতে দেখেন তিনি। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে (Burdwan Medical College) স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর শক্তিগড় থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ব্রতীনকে। থানায় যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন ব্রতীন মুখোপাধ্য়ায়। 


পাশাপাশি, কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-কে খুনের সময় গাড়িতেই ছিলেন আবদুল লতিফ, শক্তিগড় থানায় এফআইআরে দাবি লতিফেরই গাড়ির চালক শেখ নুর হোসেনের। 
'খুনের দিন লতিফকে নিয়ে ইলামবাজার থেকে দুর্গাপুর রওনা, মাঝপথে, ভিড়িঙ্গি মোড় থেকে ব্রতীন মুখোপাধ্যায়কে তুলে নেওয়া হয়। গাড়ি দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে পৌঁছলে, হোটেলের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন রাজু ঝা। লতিফ, রাজু ও ব্রতীন তিনজনে একসঙ্গে হোটেলে ঢোকেন। পরে সন্ধে নাগাদ হোটেল থেকে বেরিয়ে তিনজনেই গাড়িতে ওঠেন', শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানের সামনে রাজু বাদে সকলে ঝালমুড়ি খেতে নামেন, ফের গাড়িতে ওঠার পর, ব্রতীন চালককে পানমশলা কিনে আনতে বলেন। গাড়ি থেকে নামতেই গুলি চালায় আততায়ীরা। গাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েছিলেন রাজু। গুলি চলার পর, তাঁর মালিক লতিফের দেখা মেলেনি', এফআইআরে দাবি লতিফেরই গাড়ির চালক শেখ নুর হোসেনের। 


আরও পড়ুন- বিনা চিকিৎসায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ! এনআরএসে রোগীমৃত্যুতে বিস্ফোরক অভিযোগ