নয়াদিল্লি: ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই হেনস্থার অভিযোগ উঠছে। গতকাল বাঙালি বিদ্বেষের অভিযোগ রাজপথে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার অসমের ধুবুড়িতে বাঙালিদের উচ্ছেদের নোটিস ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ধুবুড়ির ১১ নং ওয়ার্ডে বাঙালিরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। রাস্তা তৈরির জন্য অসম সরকারের উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদে ধুবুড়িতে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তাঁরা। আর এবার ধুবুড়িতে বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করে আক্রমণ করেছেন কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতির অভিযোগ, বিজেপি শাসিত অসমের ধুবুড়িতে এবার বিজেপি ঘনিষ্ঠদেরই উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিজেপি ঘনিষ্ঠ বাঙালি হিন্দুদের বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। অসমে বাঙালিদের পরিস্থিতি ভয়াবহ', ধুবুড়ির ভাইরাল ভিডিও পোস্ট কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতির। পাল্টা বিজেপির দাবি, 'ধুবুড়িতে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে, সবাই পুনর্বাসন পাবেন।'
সম্প্রতি এ রাজ্যের বাসিন্দাকে NRC নোটিস দিয়েছে অসম সরকার। বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে পোস্ট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কোচবিহারের বাসিন্দাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ বলে দাবি করে বিরোধী দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপি। অসম সরকারের পাঠানো NRC নোটিস পেয়েছেন কোচবিহারের বাসিন্দা। আর এই ঘটনাকে সামনে রেখেই, বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জেরে ২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে ফের NRC নিয়ে তোলপাড় রাজনীতি।
কোচবিহারের বাসিন্দাকে অসম সরকারের পাঠানো NRC নোটিস নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন,'এটা জেনে আমি হতবাক ও অত্যন্ত বিচলিত যে, কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা রাজবংশী সম্প্রদায়ের উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল NRC নোটিস জারি করেছে। গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই বাংলার বাসিন্দা। তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও, তাঁকে ‘বিদেশি/অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে হয়রানি করা হচ্ছে।'
এই বিতর্কের সূত্রপাত গত জানুয়ারি মাসে। কোচবিহারের দিনহাটার চৌধুরীহাটের বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে NRC নোটিস পাঠায় অসম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।দিনহাটার বাসিন্দার দাবি, শুধু তিনি নন, তাঁর বাবার জন্মও কোচবিহারে। অথচ, অসম সরকারের পাঠানো নথিতে দাবি করা হয়েছে, উত্তমকুমার ব্রজবাসীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে ২৪ মার্চের পরে, কোনও বৈধ নথি ছাড়াই অসম সীমান্ত দিয়ে এদেশে ঢুকে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।এমনকী, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণে উপযুক্ত নথিও জমা দিতে পারেননি বলে দাবি করা হয়েছে নোটিসে।