প্রসূন চক্রবর্তী ও সমীরণ পাল: বাঁকুড়ার (Bankura) ইন্দাসে পূর্ত দফতর আর রেলের টানাপোড়েনে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রাস্তা (bad road)। চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কে রাস্তা সারাবে, তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Paraganas) বাগদায় খারাপ রাস্তায় চলাই দায় হয়ে উঠেছে বাসিন্দাদের। এখানেও রাস্তা সারাই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা।
রাস্তা সারাতেও সংঘাত!
খন্দপথে ঝুঁকির যাতায়াত। বেহাল রাস্তায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা। দুই জেলায় বেহাল রাস্তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু রাস্তা সারানোর দায় কার? তাই নিয়ে চলছে টানাপোড়েন।
কোথাও একেবারে হেলে গিয়েছে গাড়ি, কোথাও বসে গেছে গাড়ির চাকা। এই ছবি বাঁকুড়ার ইন্দাসের। ইন্দাস স্টেশনের গা ঘেঁষে এই রাস্তা চলে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মশাগ্রামের দিকে। স্টেশন লাগোয়া রাস্তাও বেহাল। স্টেশন লাগোয়া ৫০ মিটার রাস্তার এমনই হাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছর পাঁচেক ধরে রাস্তা সংস্কার হয়নি।
ইন্দাসের বাসিন্দা সুব্রত রায়ের কথায়, 'রেলের রাস্তা পঞ্চায়েতের রাস্তা নিয়ে ঝামেলা। সাধারণ মানুষ মরবে নাকি? সরকার কী ভাবছে?' ইন্দাসের টোটো চালক সুশোভন সিংহের কথায়, 'স্টেশনের প্যাসেঞ্জার নিতে বিরাট সমস্যা হয়। যে কোনও মুহূর্তে উল্টে পড়ে যেতে পারে। রিস্ক নিয়ে গাড়ি চালাই।'
কিন্তু রাস্তার সংস্কারের দায়িত্ব কার? PWD ও রেল একে অপরের দিকে দায় ঠেলাঠেলি। ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও সভাপতি চন্দন রক্ষিত বলেন, 'এগুলো রেলের রাস্তা, বারবার বলেছি। কাঁচামাল এনেছিলাম, রেল রিপেয়ার করতে দেবে না।' রেলের তরফে দ্রুত রাস্তা সারানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে একই হাল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার কনিয়াড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই রাস্তার। চলছে ঝুঁকির যাতায়াত। প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে কঙ্কালসার চেহারা। জুতো হাতে নিয়ে যাতায়াত করেন আশপাশের ৪-৫টি গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা আলি হোসেন তরফদারের অভিযোগ, 'মেন হচ্ছে রোগীপত্র হলে রাতে কোনও গাড়ি আসছে না, রাস্তায় হেঁটে বা গরুর গাড়ি ছাড়া উপায় নেই।' অটো চালক কালীপদ বিশ্বাস বলছেন, 'রাস্তা স্লিপ হয়ে গেছে। বহু বছর ধরে রাস্তা খারাপ।'
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীন এই রাস্তা সারানো নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি চলছে অনেক বছর ধরে। পঞ্চায়েত ভোটের পরেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাগদার কনিয়াড়া ১ পঞ্চায়েতের বিজেপি নেতা ও প্রধান সমীর বিশ্বাস বলেন, 'এর আগে যারা ছিল পঞ্চায়েত সমিতির কাজ করেনি। পঞ্চায়েত সমিতি আশ্বাস দিলেও বিশ্বাসী নই।' বাগদা পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল নেতা ও সহ সভাপতি তরুণ ঘোষ বলছেন, 'দিল্লি সরকার টাকা দেয়নি, সংস্কার হয়নি। ওরা টাকা দেবে না। অন্য স্কিম থেকে সংস্কারের কথা ভাবছি।'
এই টানাপোড়েনে রাস্তা সংস্কার আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন