ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, বাগুইআটি : অপহরণের (Kidnap) পরে দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল বাগুইআটি (Baguiati)। চলন্ত গাড়িতেই মেরে বাসন্তীর ক্যানেলে দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


গত ২২ অগাস্ট বাগুইআটির জগত্‍পুর থেকে দুই ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে বাড়িতে এসএমএস পাঠায় অপহরণকারীরা। টাকা না দিলে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। এরপর ২৩ অগাস্ট বাগুইআটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। ২৪ অগাস্ট নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তার পরেও পুলিশ তৎপর হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। 


পুলিশের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ উঠছে ?


গত ২২ অগাস্ট থেকে এই দুই কিশোর নিখোঁজ হয়। মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ২৪ তারিখে লিখিত অভিযোগ করে পরিবার। ঘটনার পরের দিনই অর্থাৎ ২৩ তারিখে এক জনের দেহ উদ্ধার হল। দেহ চলে যায় বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ মর্গে। অথচ বসিরহাট পুলিশ জেলা বিধাননগর কমিশনারেটকে জানাল না ? এদিকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে ২৪ তারিখে অপহরণের এফআইআর হল, অথচ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট একদিন আগেই উদ্ধার হওয়া দেহর কথা ১৪ দিন পরে জানতে পারল। এনিয়েই পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।


আরও পড়ুন ; বাগুইআটিতে অপহরণের পরে দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ ! গ্রেফতার ৪


প্রশ্ন উঠছে, পরিবার অপহরণের অভিযোগ করা সত্ত্বেও কেন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিল না পুলিশ ? কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার পরও, কেন আরও সক্রিয়তা দেখা গেল না ? প্রায় ১৪ দিন ধরে পুলিশ মর্গে মৃতদেহ পড়ে রইল, আর সেটা পুলিশই জানতে পারল না কী করে ?


পুলিশ জানাচ্ছে, পরিবারের তরফে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিষেক ও অতনুর নিখোঁজের পেছনে থাকতে পারে প্রতিবেশী সত্যেন্দ্র চৌধুরী। এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এই সময়ের মধ্যে অভিযোগকারী ২-৩টি এসএমএস এবং ফোন কল পান। যেখানে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়। গতকাল খবরের ভিত্তিতে অভিজিৎ বোস নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘক্ষণ পুলিশি জেরায় সে ভেঙে পড়ে। স্বীকার করে নেয়, ২২ তারিখে সে, সত্যেন্দ্র এবং আরও ২-৩জন মিলে তারা ওই দুই কিশোরকে গাড়ির মধ্যেই গলায় ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলে। বাসন্তী হাইওয়ের ওপর কোনও একটা জায়গায়। তখন রাত ৯টা থেকে ১০টা। তারপর বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে আরও একটু এগিয়ে ক্যানেলের দুটি পৃথক জায়গায় মৃতদেহ দুটি ফেলে দেওয়া হয়। এরপরই কলকাতা, বারুইপুর, বসিরহাট সব জায়গায় খোঁজখবর শুরু হয় কোথায় শনাক্তকরণ না হওয়া মৃতদেহ আছে। এরপর বসিরহার্টে মর্গে ৩টি মৃতদেহ পাওয়া যায় যেগুলির শনাক্তকরণ হয়নি। বডিগুলি শনাক্তকরণের জন্য অতনু ও অভিষেকের বাড়ির লোকজনকে পাঠানো হয়। তার মধ্যে ইতিমধ্যে অতনুর বাড়ির লোকজন অতনুকে শনাক্ত করেছে।