সুনীত হালদার, সাঁকরাইল : ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক ব্যাঙ্ক কর্মীকে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ব্যক্তি মোট ৩৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
কী ঘটনা ?
শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আন্দুল পূর্ব পাড়ার কাছে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সামনে গ্রাহক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ভিড় জমান। গ্রাহকরা অভিযোগ জানান, ব্যাঙ্কের এক কর্মী তাঁদের থেকে ঋণ পরিশোধের টাকা তুললেও তা সরাসরি ব্যাঙ্কে জমা করেননি। বিষয়টি গতকাল রাতে সামনে এলে শোরগোল পড়ে যায়। গ্রাহকরা টাকার দাবিতে ব্যাঙ্কের সামনে জড়ো হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে আসে সাঁকরাইল থানার পুলিশ।
ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহক শেখ নাজিম অভিযোগ করেন, তিনি ৮ মাস আগে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ওই ব্যাঙ্কের কর্মী কৌশিক পাড়ুইকে ঋণ পরিশোধের জন্য জমা দিলেও সেই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি । এছাড়া তাঁর নামে ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে ঋণ পাস করা হলেও তিনি তা হাতে পাননি। শুক্রবার ব্যাঙ্কের এরিয়া ম্যানেজারের কাছে যাওয়ার পর পুরো বিষয়টি তিনি জানতে পারেন।
একই কায়দায় গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের টাকা বাজার থেকে তুললেও কৌশিক ব্যাঙ্কে জমা করেননি বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ৩৩ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে। ২০ থেকে ২৫ জনের কাজ থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ। ব্যাঙ্ক থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশিক পাড়ুই নামে ওই কর্মীকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) বিশ্বজিৎ মাহাতো জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বর্ধমানে প্রতারণা-
চলতি বছরে মার্চ মাসে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। খোদ বিশ্ববিদ্যালয় এমনভাবে প্রতারণার শিকার হওয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ অবশেষে গ্রেফতার করে অভিযুক্তদের। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মী।
মেয়াদের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ টি ফিক্সড্ ডিপোজিট থেকে সই ও অ্যাডভাইসড্ নোট নকল করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফিনান্স অফিসার ও রেজিস্ট্রারের সই নকল করে ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলার অভিযোগ ছিল।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙানোর চেষ্টা করা হয় ইউকো ব্যাঙ্কের বর্ধমানের বড়বাজার শাখায়। ফিক্সড ডিপোজিটকে বেআইনি ভাবে ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন কর্মী এবং বর্তমান এক কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন ওই ব্রাঞ্চের সিনিয়র ম্যানেজার নেহা রানি।