তুহিন অধিকারী, বিষ্ণুপুর: লাগাতার হাতির তাণ্ডবে উত্যক্ত বাঁকুড়াবাসী। লাগাতার হামলা, তাতে প্রাণহানি লেগেই রয়েছে। এবার সেখানে বিঘের পর বিঘে জমিতে চাষ করা আলু পিষে দিল হাতির দল। এই ঘটনায় আবারও বন দফতরের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন দফতর হাতির উৎপাত রুখতে ব্যর্থ বলে দাবি তাঁদের। হাতির দলের উপর নজরাদারি চালানোয় সমস্যা রয়েছে বলে যেমন অভিযোগ, তেমনই ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। (Elephant Attack)


বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বন বিভাগের বাকাদহ রেঞ্জের অন্তর্গত আমডগড়া বিটের গোটশোল এলাকার ঘটনা। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ২০-২৫ হাতির দল বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। গোটশোল এলাকায় বিঘের পর বিঘে জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। রাতভর সেই আলুর জমির উপর তাণ্ডব চালায় হাতির দল। কৃষকদের দাবি, আলু বসানোর পর অকাল বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল গোড়াতে। যা বেঁচেছিল, তা ঘরে তোলার আগে হাতির দল মাঠে ফসল নষ্ট করে দিল। (Bankura News)


ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, মহাজনের থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, সেই টাকায় আলু চাষ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখন কী করবেন, ভেবে কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না। মাথায় হাত দিয়ে বসে রয়েছেন সকলে। কৃষকদের দাবি, হাতির দল হামেশাই এই অত্যাচার চালায়। প্রতি বছরই তাতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু সব জেনেও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয় না বন দফতর। এমনকি এলাকায় হাতি ঢুকছে বলে বন দফতর আগাম সতর্কবার্তাও দেয় না বলে দাবি কৃষকদের।


আরও পড়ুন: Padma Shri 2024 : সেলাইয়ের ক্লাসের প্রতি ভালবাসা থেকে বাংলার কাঁথাস্টিচ-কুইন, পদ্মশ্রী তাকদিরার পথচলার গল্প


ফলে প্রতিবছরই হাতির হানায় বিপুল ক্ষতি হয় গোটশোল এলাকার কৃষকদের। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকরা জানাচ্ছেন, সরকারি সাহায্য ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় নেই। সরকারি সাহায্য না পেলে হয়তো আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন বলেও জানান কেউ কেউ। এমনকি স্থানীয় রেঞ্জ এবং বিট অফিসারদের উপরও ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার কৃষকরা। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে, বিষ্ণুপুর- পাঞ্চেত বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ জানান, হাতির দলে কিছু বাচ্চা হাতি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা দেন, রেঞ্জ অফিসে যোগাযোগ করলে, বন দফতরের নিয়ম অনুযায়ী অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।  


বাঁকুড়ার অন্যত্রও একই পরিস্থিতি। হাতির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত জনজীবন। বড়জোড়া রেঞ্জের জঙ্গল ঘেরা গ্রাম পুরুনিয়া। মঙ্গলবার সাতসকালে সেখানেও দলছুট হয়ে কয়েকটি হাতি ঢুকে পড়ে। ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না বাসিন্দারা। প্রায়শই এমন ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের।