প্রসূন চক্রবর্তী ও পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: জঙ্গলমহল (Jangalmahal) মানেই  চোখের সামনে সারি সারি গাছ আর পাহাড়ের মেলবন্ধন।দু’পাশ থেকে উঠে আসে সবজ বনানীর গম্বুজ ঢেকে রেখেছে কালো পিচের রাস্তা। প্রকৃতির এই মোহময়ী রূপই বার বার ফিরে আসতে বাধ্য করে পর্যটকদের। অতিমারিতে মাঝের দু’বছর তাতে ভাঁটা পড়লেও, ফের ভ্রমণপিপাসু মানুষ ফিরে আসতে শুরু করেছেন জঙ্গলমহলের অন্তর্গত বাঁকুড়ায়। মুকুমণিপুর (Mukutmanipur) জলাধার, যা কি কিনা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ, পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাঁকুড়ার ‘রানি’ এই জলাধার। এ বারও সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে তৈরি সে। আর তার দৃষ্টিনন্দন রূপ দু’চোখ দেখে নিতেই এসে ভিড়ছেন পর্যটকরা (Bankura Tourism)।


করোনার ভয়াবহতা আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কেটেছে। তার মধ্যেই যদিও আতঙ্ক হয়ে নেমে এসেছে ওমিক্রন (COVID Variant Omicron)। তবে জঙ্গলমহলের পর্যটন শ্বাস নিতে শুরু করেছে। শীত জাঁকিয়ে বসতেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। জলাধারের নীল জলের সঙ্গে আকাশের নীল দিগন্তের মেলবন্ধন চুটিয়ে উপভোগ করছেন তাঁরা। নৌকোয় চেপে চলাঝারের অপর প্রান্তের ডিয়ার পার্ক, মুসাফিরানা ভ্রমণ চলছে।


কোভিডের ধাক্কা সামলে মুকুটমণিপুর আগের চেয়ে আরও দৃষ্টিনন্দন এবং উন্নত হয়েছে বলেও দাবি করছেন পর্যটকদের একাংশ। থাকা-খাওয়ার মানও আগের চেয়ে ভাল হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। আর তাতেই ফের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে মুকুটমণিপুর। এলাকার পর্যটন নির্ভর মানুষও খুশি। নৌকোর মাঝি কর্ণ সর্দারের কথায়, ‘‘গত দু’বছর কোভিডের জন্য খুব সমস্যায় ছিলাম। এখন আবার পর্যটকরা আসছেন। রোজগারের মুখ দেখছি। খুব ভাল লাগছে।’’


আরও পড়ুন: Christmas 2021 : বড়দিনে পার্কস্ট্রিটে বড় চমক, ৫৪ ফুট লম্বা ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তা !


আগে অনেক বার এলেও, এখনকার মুকুটমণিপুরের সঙ্গে আগের মুকুটমণিপুরকে মেলাতে পারছেন না পর্টকরাও। বেড়াতে আসা ঝর্ণা মাহাত বলেন, ‘‘আগের মুকুটমণিপুর আর এখনকার মুকুটমণিপুরের মধ্যে অনেক ফারাক। আগের চেয়ে উন্নতিই হয়েছে।’’


তবে পর্যটকদের আনাগনায় মুকুটমণিপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক জেলা প্রশাসনও।মুকুটমণিপুরের ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন, ‘পিকনিক স্পট চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে জঞ্জাল সাফ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, সব করে দেওয়া হয়েছে।অতিমারির প্রকোপ যেহেতু কাটেনি, তাই নৌকাবিহার থেকে শুরু করে সব কিছুর উপরই নজরদারি চলছে।’’ মুকুটমণিপুরের পর্যটনকে ধরে রাখাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়।