তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: ফের হাতির হানায় (Elephant Attack) নষ্ট বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। জয়পুর থানার আঙ্গারিয়া গ্রামে ৫০ থেকে ৫৫ টি হাতির দল ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে নষ্ট করে দিল বিঘার পর বিঘা আলুর ও সবজির জমি। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর থেকে ৫০ থেকে ৫৫ টি হাতির একটি দল জয়পুর থানার (Jaypur Police Station) আঙ্গারিয়া গ্রামে ঢুকে পড়ে। একের পর এক আলুর জমি এবং সবজির জমিতে তাণ্ডবে লীলা চালায়। তারপর সকালবেলায় বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে প্রবেশ করে হাতির দল। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আঙ্গারিয়া গ্রামের মানুষজন।


কৃষকদের অভিযোগ, মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে বাড়ির মেয়েদের সোনার জিনিস বন্ধক রেখে কোনও ভাবে টাকা জোগাড় করে আলু চাষ করেছিলেন। আর মাত্র ১৫-২০ দিনের মধ্যেই এই আলুগুলি ঘরে তুলতেন। তার আগেই যেন একেবারে পাকা ধানে মই দিয়ে গেলেন হাতির দল। বনদপ্তর এর গাফিলতির কথা তুলে ধরেছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের দাবি এতগুলি হাতি একসঙ্গে গ্রামে চলে আসবে আগে থেকে কোনো রকম সতর্ক করা হয়নি গ্রামবাসীদের। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বিভাগের বিভাগীয় বন আধিকারিক জানান, 'অনেকদিন জেলায় হাতি আসেনি। গতকাল রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৫০ থেকে ৫৫ টি হাতির একটি দল বাঁকুড়ায় প্রবেশ করে। যে সমস্ত কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে তাদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।' 


দিনকয়েক আগেই বানারহাটে একটি চা বাগানে ঢুকে পড়েছিল ৩৫টি হাতির একটি দল। পাশাপাশি ডিসেম্বরের শুরুতেই মেটেলিতে (Meteli) শ্রমিক আবাসনে হামলা চালায় একটি হাতি (Elephant)। শুধু তা-ই নয়, ঘরের দেওয়াল ভেঙে ঢুকে সাবাড় করে খাদ্যদ্রব্য। নষ্ট করে দেয় ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র। আতঙ্কে বাড়ির লোক পালিয়ে কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন। ঘটনাটি ঘটেছে মেটেলি ব্লকের চালসা চা বাগানের বাসা লাইনে। এর জেরে চা বাগানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রের খবর, গতকাল রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সংলগ্ন চাপরামারী জঙ্গল থেকে একটি বুনো হাতি বের হয়ে আসে এলাকায়। এলাকার মনি বিশ্বকর্মার আবাসে হামলা চালায় হাতিটি। বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয়। রাত প্রায় ১টা নাগাদ খুনিয়া স্কোয়াডের বনকর্মীরা বাগানে এসে হাতিটিকে ফের জঙ্গলে পাঠায়। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। বন দফতর সূত্রের খবর, বাগান কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। হাতির খবর পাওয়ার পরেই বনকর্মীরা এলাকায় যায়। বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন, জেলেই অনুব্রত, পিছিয়ে গেল জামিনের আবেদনের শুনানি


দিনকয়েক আগেই সাত সকালে চা বাগানে ঢুকে পড়ে ৩৫টি হাতির একটি দল। আতঙ্ক ছড়ায় বানারহাটের (Banarhat) মগোলকাটা চা বাগানে। শ্রমিকরা ঘুম থেকে উঠে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁরা দেখতে পান, বাগানে প্রায় ৩৫টি হাতির একটি দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কর্মীদের জানানো হয়। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বনকর্মীরা। স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে হাতির দলটি ডায়নার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে প্রথমে মোগলকাটা বস্তিতে (Slum) ঢুকে পড়ে। সেখানে ধানখেতে রাতভর খাবার খেয়ে, সকালের দিকে জঙ্গলে ফেরার সময় সূর্যের আলো ফুটে ওঠায় চা বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ে। দিনকয়েক আগে বন দফতরের পাতা খাঁচায় ধরা পড়ে একটি পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ। মেটেলি ব্লকের কিলকোট চা বাগানের ঘটনা। ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। দিনকয়েক আগে বাগানের ১২ ও ১৩ নম্বর সেকশনের মধ্যবর্তী এলাকায় বন দফতরের তরফে ওই খাঁচা পাতা হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট দিনে বাগানের মানুষ ওই এলাকায় চিতাবাঘের গর্জন শুনতে পায়। কাছে গিয়ে দেখা যায়, একটি চিতাবাঘ খাঁচার মধ্যে ধরা পড়ে।