কানকাটা, বাঁকুড়াঃ  বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখরের ( BJP Leader Niladrishekhar) মেয়েকে দীর্ঘ সময় ধরে  জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি (CID Interrogation)। এই মামলায় (AIIMS Recruitment Corruption Case) চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এবার নীলাদ্রিশেখরের মেয়েকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় সিআইডি (CID)। শুক্রবার আইনজীবীর উপস্থিতিতে নীলাদ্রিশেখর দানা-র মেয়ে মৈত্রেয়ী দানাকে প্রশ্ন করা হয়।  প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে চলে এই জিজ্ঞাসাবাদ। 


আরও পড়ুন, হেলমেট পরে রাতভর ব্যাঙ্কে আত্মগোপন, গয়না চুরির ঘটনায় গ্রেফতার ব্যাঙ্কেরই কর্মী


কল্যাণী এইমসে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে এই মামলায় আগেই বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে নোটিস পাঠিয়েছিল সিআইডি। সেই মতোই শুক্রবার দুপুর ১ নাগাদ নীলাদ্রিশেখরের বাড়িতে বাঁকুড়ার সদর থানার পুলিশকে নিয়ে পৌঁছয় সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা। দীর্ঘ দুই ঘন্টার এই জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন। কী করে কম নম্বর  পেয়েও এই চাকরি হল মৈত্রেয়ীর ? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে ওঠে। চাকরির নিয়োগের সময় কী কী নথি জমা দিয়েছেন মৈত্রেয়ী, কীভাবে এই চাকরি হয়েছে, কত টাকা বেতন মিলছে, একের পর এক প্রশ্ন করেন সিআইডির অফিসারেরা। মূলত কল্য়াণী এইমসে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগের জেরেই বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখরের বাড়িতে আসেন তদন্তকারী অফিসারেরা। যদিও  এই মামলায় ইতিমধ্যেই চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি-র অফিসারেরা। এদিকে এই তলবের পর রীতিমত হুমকিও দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানা, বলে অভিযোগ উঠে আসে। 


প্রসঙ্গত, একদিকে যখন শিক্ষক নিয়ে নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। একের পর এক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অভিযোগে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদলের শীর্ষ নের্তৃত্ব। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী প্রত্যেকেই সিবিআই-র তলবে জেরবার। সম্প্রতি কিছু দিন আগেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নাম জড়িয়ে সিবিআই তদন্তের পর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতার। ববিতা সরকারের অভিযোগে, কম নাম্বার পেয়েও অঙ্কিতার চাকরি পাওয়ার ঘটনা ফাঁস হতেই বড় সিদ্ধান্ত জানায় হাইকোর্টের বিচারপতি। এদিকে  কল্যাণী এইমসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও অনেকটাই যেনও সেই ছায়াই এসে পড়েছে। এখানে নম্বর কম পেয়েও চাকরি পাওয়া অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রেক্ষাপট আলাদা হলে কয়লাপাচার কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র তলবে সাড়া দিয়ে গতবছর দিল্লিতে যাওয়ার আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'এটা পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।' একদিকে রাজ্যে শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় তদন্তে রয়েছে সিবিআই, আর তখন এইমসে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে সিআইডি। এহেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত ক্রমশ বেড়েই চলেছে, বলে চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে।