পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : মাইক বাজিয়ে ক্লাসঘর 'দখল', চলছে 'আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান' কর্মসূচি ! বাঁকুড়ার খাতড়ায় চাকা নির্মলানন্দ হাইস্কুলে শিকেয় উঠেছে পঠনপাঠন। মাইক বাজানোর পাশাপাশি ধামসা মাদল নিয়ে নাচ-গান চলেছে বলেও শোনা গিয়েছে। পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনায় তৃণমূলকে একহাত নিয়েছ বিজেপি। শাসকদলের মদতে শিক্ষায় জলাঞ্জলি, কটাক্ষ বিজেপির। মিথ্যা অভিযোগ তুলে গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি, পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। 

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবকান্তি মহান্তি জানিয়েছেন, তাঁরা বলার পর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার আগে অবশ্য মাইক বাজছিল। সমস্যা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, পঠনপাঠন এমন একটা বিষয় যে, তার পাশাপাশি অন্য সরকারি প্রকল্প চালানো মুশকিল। তবে যেহেতু প্রধান শিক্ষককে সরকারি ভাবে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, যে এই স্কুলে 'আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান' কর্মসূচি করা হবে, তার ফলে সরকারি কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। একই সঙ্গে স্কুল এবং সরকারি কর্মসূচি চালাতে হচ্ছে প্রধান শিক্ষককে। তবে রবিবার এই ধরনের কর্মসূচি করা হলে, বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে সুবিধা হবে, একথাও বলেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। 

শুক্রবার দিনভরের এই আজব ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। স্কুল চলাকালীন কীভাবে মাইক বাজিয়ে, ধামসা মাদল বাজিয়ে সরকারি কর্মসূচি চলতে পারে, তাও আবার মহকুমার প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পড়ুয়াদের অভিভাবকরা তাঁদের সমস্যা জানালে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়, তারপর মাইক বাজানো বন্ধ হয়। কিন্তু কর্মসূচি চলতে থাকে। মাইক বন্ধ হলেও ধামসা, মাদল বাজিয়ে চলতে থাকে নাচগান। ফলে পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠেছে। আর সন্তানদের পঠনপাঠন এভাবে শিকেয় ওঠায় চিন্তায় অভিভাবকরা। 

অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, মাইক বাজিয়ে, ধামসা, মাদল বাজিয়ে কিছু করা হয়নি। তেমন কোনও আওয়াজ বা শব্দ হয়নি। পড়ুয়াদের পড়াশোনায় কোনও সমস্যা হয়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এমনিতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি স্কুলের অবস্থা যথেষ্ট সঙ্গিন। কোথায় পড়ুয়া নেই, তো কোথাও ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। আর তার ফলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে পঠনপাঠন। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়ার স্কুলের এ হেন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল শুরু হয়েছে। খাতড়ার ওই স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা।