প্রসূন চক্রবর্তী,বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার (Bankura) কাদাঘাটিতে সেতু নির্মাণের দাবিতে মেজিয়া ব্লক অফিস ঘেরাও গ্রামবাসীদের। প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। ভোট আছে ,ভোট যায় তবু সেতু (Bridge) নির্মাণ আর হয় না। বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের কুস্তোড় পঞ্চায়েতের নাটশালা সেতু যেন শুধুই প্রতিশ্রুতি। দুর্লভপুর থেকে কাদাঘাটি যাওয়ার রাস্তায় নাটশালার কাছে এই ভগ্ন সেতু নির্মাণের দাবি বহুদিনের । বারংবার পঞ্চায়েত থেকে ব্লক, পঞ্চায়েত সমিতি সহ জেলা পরিষদের দরজায় কড়া নাড়লেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। হচ্ছে, হবে, দেখছি বলেই দায় সেরেছেন সকলে। 


উল্লেখ্য ২০১৮ সালে হড়পা বনে এই সেতুটি ভেঙে যায় । তারপর দীর্ঘ চার বছরেও হয়নি সেতু নির্মাণ। এই রাস্তা দিয়ে নাটশালা ,কাদাঘাটি, বেলবরিয়া সহ ৫-৬ টি গ্রামের মানুষের নিত্য যাতাযত। পূজোর আগে মাটি দিয়ে অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করেন নেতারা। কিন্তু সেই সেতু কদিনের? বর্ষা শুরুতে জলের তোড়ে মাটি ধুয়ে সাফ করেছে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতি বছর। বর্তমানে জলে নেভে সাইকেল কাঁধে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ এ অবস্থায় গ্রামে আসেনা কোন এম্বুলেন্স, বর্ষায় পড়ুয়ারা যেতে পারে না স্কুলে, নিত্য যাদের প্রয়োজন  ১০-১২  কিলোমিটার ঘুর পথে যেতে হয় তাদের। বারংবার প্রশাসনকে জানিয়েও মেলেনি কোন সুরাহা। তাই আজ গ্রামের সকলে মেজিয়া সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যলয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাদের সেতুকে পাকা করার দাবিতে সরব হন সবাই।এ বিষয়ে মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জন্মেঞ্জয় বাউরী জানান, 'আমাদের যে ফান্ডের টাকা সেটা সীমিত । আমরা বিডিও সাহেবের সাথে আলোচনা করলাম, ইঞ্জিনিয়ার কে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।এ বিষয়ে মেজিয়া সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, আমরা বিষয়টি দেখছি ।'


আরও পড়ুন, 'শুভেন্দুকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না ?', 'সিবিআই সেটিং' নিয়ে বিস্ফোরক শান্তনু


প্রসঙ্গত, বাড়ছে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া গন্ধেশ্বরী নদীর জলের স্তর । জলের স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়েছে কাঠের সেতু আগাম সতর্কতা হিসেবে অস্থায়ী কাঠের সেতু বন্ধ করে দিয়েছে বাঁকুড়া পুরসভা । পাশাপাশি বাঁকুড়ায় নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জল বাড়তে শুরু করে দ্বারকেশ্বর নদেও। দ্বারকেশ্বর নদের এক পাড়ে রয়েছে বাঁকুড়া শহর। অন্য পাড়ে রয়েছে ভাদুল, সুরপানগর, সোনাতপল, বালিয়াড়া- সহ দশ থেকে বারোটি গ্রাম। এই গ্রামগুলির মানুষকে বাজার হাট থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ অফিস-আদালত সহ বিভিন্ন কাজে  প্রতিদিন নিত্য  যাতায়াত করতে হয় বাঁকুড়া শহরে। বাঁকুড়ার শহরের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা সবজির একটা বড় অংশও আসে ওই গ্রামগুলি থেকে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য আজ থেকে কয়েক বছর আগে ভাদুল ও সুরপানগরের মাঝে দ্বারকেশ্বর নদের ওপর একটি কজওয়ে তৈরি করে রাজ্য সরকার। প্রতিবছর বর্ষায় সেই কজওয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বর্ষা পেরোলেই ফের কজওয়ে মেরামতি করে তা দিয়ে যাতায়াত শুরু হয়।