বোলপুর: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নিরিখে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন (UNESCO Heritage)। রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন UNESCO-র তরফে বিশ্বের একমাত্র সমকালীন ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হল শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে। রবিবার UNESCO-র তরফে এই ঘোষণা করা হল। (UNESCO Heritage Santiniketan)


সৌদি আরবের রিয়াধে UNESCO-র ওয়র্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠক চলছে। ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে বৈঠক, চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শনিবার সেখানেই শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হল। রবিবার মাইক্রোব্লগিং সাইট ট্যুইটারে (সাবেক X) এই ঘোষণা করে UNESCO. সেখানে লেখা হয়, 'UNESCO-র বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকায় নয়া সংযোজন: শান্তিনিকেতন। ভারতকে অভিনন্দন'।


১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন আবাসিক স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেন। তার র ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর যাত্রার সূচনা। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতীর স্বীকৃতিলাভ। গোটা জীবনের সব অর্জন, সঞ্চয়ের আধার হিসেবে শান্তিনিকেতনকে ব্যাখ্যা করেছিলেন কবি। শান্তিনিকেতনকে রক্ষা করতে দেশবাসীর আদর ও যত্ন প্রয়োজন বলে মহাত্মা গাঁধীকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন কবি।



আরও পড়ুন: Vishwakarma Yojana: জন্মদিনে বিশ্বকর্মা প্রকল্প মোদির, কেন অনুপস্থিত তৃণমূল সরকার, প্রশ্ন কেন্দ্রের


এ বছর রবীন্দ্রজয়ন্তীতেই জানা যায়, UNESCO ওয়র্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের তরফে শান্তিনিকেতনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং দেশের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের তরফে সেই মর্মে আবেদন জানানো হয়েছিল। ২০১০ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার এবং পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণেরমহানির্দেশক গৌতম সেনগুপ্ত প্রথন শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যকে বিশ্বদরবারে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন।


UNESCO-র তরফে মূলত সৌধ বা স্মৃতিস্তম্ভকেই হেরিটেজ তালিকায় রাখা হয়। এই প্রথম সক্রিয় অবস্থায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় জায়গা পেল। খোলা আকাশের নীচে, মুক্ত বাতাসে শিক্ষাপ্রাপ্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আজও সেই প্রথা চলে আসছে শান্তিনিকেতনে। যদিও ইদানীং কালে রাজনৈতিক কারণে বার বার উল্লেখ উঠে আসে শান্তিনিকেতনের। 


১৯২১ সালে, ১ হাজার ১৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা। রবীন্দ্রনাথের নামেই নামকরণ হয় প্রথমে। ১৯২২ সালের মে মাসে বিশ্বভারতী সোসাইটির প্রতিষ্ঠা হয়। জমি-বাংলো-সহ নিজের বিষয়-সম্পত্তিও বিশ্বভারতী সোসাইটিকে দান করেন রবীন্দ্রনাথ। স্বধীনতার আগে পর্যন্ত কলেজ ছিল। ১৯৫১ সালে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য ছিলেন রীবন্দ্রনাথের ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের দাদু ক্ষীতিমোহন সেন দ্বিতীয় উপাচার্য হন।