পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: আগের অঞ্চল সভাপতিদেরই (area president) ফের দায়িত্ব দেওয়ায় বাঁকুড়ায় (bankura) তাণ্ডব (agitation) দেখালেন তৃণমূলকর্মীদের (TMC) একাংশ। সিমলাপালে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ঘোষণা হতেই বাঁকুড়ায় পার্টি অফিসে ভাঙচুর (ransack)। সূত্রের খবর, আগের অঞ্চল সভাপতিদের পুনর্বহাল করায় ক্ষোভ দেখান তৃণমূলকর্মীদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, 'ভোটের সময় নিষ্ক্রিয় থাকা সত্ত্বেও কেন অঞ্চল সভাপতি পদে পুনবর্হাল করা হল তাঁদের?' গোটা ঘটনায় হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কেউ যুক্ত থাকলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, জানালেন তাঁরা। ঘটনাচক্রে এমনই এক দিনে ঘটনাটি ঘটেছে, যখন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে দলকে দিকনির্দেশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী ঘটেছিল?
সিমলাপাল ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে দুপুর ১২টা নাগাদ ধুন্ধুমার ঘটে। চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। মূল দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, বেশ কিছুদিন আগেই তাঁরা স্থানীয় বিধায়ককে জানিয়েছিলেন যে সিমলাপালের যে সাতটি অঞ্চল রয়েছে তার বেশ কয়েকজনকে পরিবর্তন করা হোক। কিন্তু জেলা তৃণমূল ভবন থেকে যখন তালিকা প্রকাশ হয়, তখন দেখা যায় সাত জায়গাতেই পুরনো অঞ্চল সভাপতিদের বহাল রেখেছে দল। তারই প্রতিবাদে আজ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে এসে ভাঙচুর চালান কর্মীরা। এটি শুধু কার্যালয় নয়, বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্রও। সেই জায়গায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই একাধিক পরিষেবা বিপর্যস্ত। এখনও পর্যন্ত কোনও শীর্ষ নেতৃত্বের দেখা পাওয়া যায়নি। তবে এটি জানানো হয়েছে যে যাঁরা এমন কাজ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। উল্টো দিকে, বিজেপির কটাক্ষ, পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তত প্রকাশ হবে।
আগেও এক ঘটনা...
শাসকদলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের অভিযোগ নতুন নয়। সপ্তাহদুয়েক আগেই কাঁথির দুলালপুরে তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ সামনে চলে আসে! তার জেরে পদত্যাগের সিদ্ধান্তই অনড় থাকেন অঞ্চল সভাপতি। গত ১০ ডিসেম্বর, তৃণমূল পরিচালিত দুলালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ ৭ জন সদস্য ইস্তফা দেন। দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূলের দুলালপুরের অঞ্চল সভাপতি মলয় সামন্তও। ইস্তফাপত্রে দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন পদত্যাগীরা। ১২ ডিসেম্বর পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলার সভাপতি নেতৃত্বে পদত্যাগীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পরে পদত্যাগীরা ইস্তফাপত্র প্রত্যাহারে রাজি হন। কিন্তু তার পরের দিনই সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আনোয়ার উদ্দিনের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁর অনুগামীরা। এরপর এলাকার সমস্ত বুথ সভাপতিকে নিয়ে আলোচনায় বসেন পদত্যাগী অঞ্চল সভাপতি। বৈঠকর পর দলীয় পদে থাকতে চান না বলে ফের স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। মলয় সামন্তের কথায়, 'আমরা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকে সমস্ত কথা জানিয়েছিলাম। উনি সবটা মিটিয়ে দেওয়ার বিশ্বাস দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে দেখলাম, তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সংখ্যালঘু সভাপতি পঞ্চায়েতের সামনে আমাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান।'
আরও পড়ুন:২ জানুয়ারি দিনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, নজর রাখুন' কোনদিকে ইঙ্গিত অভিষেকের?