পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : গরমে এমনিতেই নাস্তানাবুদ অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে পানীয় জলেরও যদি হাহাকার দেখা দেয়, তাহলে সহ্য ক্ষমতা হাতের বাইরে চলে যায় বৈকি ! গ্রীষ্মের দাবদাহ যত বাড়ছে ততই গ্রামে তীব্র হচ্ছে জল-কষ্ট। শুকিয়ে কাঠ নদী, নালা, খাল, বিল। গ্রামের নলকূপের জল পানের অযোগ্য। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ। এই পরিস্থিতিতে হাঁড়ি-কলসি নিয়ে রাস্তায় নামলেন গ্রামের মানুষ। গ্রামের রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি তাঁদের হুঁশিয়ারি, দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে ভোটও দেবেন না তাঁরা। বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের বাঁকি গ্রামের ঘটনা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


বাঁকি গ্রামে জল সমস্যা নতুন নয়। এখানকার কয়েকশো পরিবারকে বছরভর জলের সমস্যায় ভুগতে হয় বলে অভিযোগ। কারণ, এই গ্রামের নলকূপগুলি থেকে যে জল পাওয়া যায় তা পানের অযোগ্য। এই পরিস্থিতিতে ভরসা ছিল নলবাহিত পানীয় জল। গরম পড়তেই সেই নল দিয়েও বন্ধ হয়ে গেছে জল পড়া। ফলে, পরিবারগুলিতে শুরু হয়েছে তীব্র জলসঙ্কট। অগত্যা গ্রামের মানুষকে অন্য গ্রাম থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কোনও কোনও পরিবার বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী দ্বারকেশ্বরের দূষিত জল ব্যবহার করছেন।


এই পরিস্থিতিতে গ্রামে অবিলম্বে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের দাবিতে আজ সকাল থেকে স্থানীয় রাস্তায় হাঁড়ি, কলসি নামিয়ে পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা। তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। গ্রামবাসীর দাবি, ভোট এলেই গ্রামে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ভোট পেরোলেই নেতারা তা ভুলে যান। 


দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে গ্রামের মানুষ আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির অভিযোগ, জল সঙ্কট মেটাতে কেন্দ্রের সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু, রাজ্য সরকার কাটমানি নিয়ে সেই টাকা নয়ছয় করায় সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় জল পাচ্ছেন না। 


যদিও বিজেপির অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল। তাদের দাবি, এলাকায় আগেও জলের কোনও অভাব ছিল না। এখন যদি গ্রামে জলের সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে তার জন্য দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও পড়ুন ; তীব্র গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ, জেলায় জেলায় জলকষ্টে নাজেহাল বাসিন্দারা