কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: ট্রেনের মধ্যে আচমকাই প্রসববেদনা। কাতরাতে শুরু করেছিলেন গর্ভবতী মহিলা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে থামানো হল ট্রেন। ট্রেনের কামরাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন ওই মহিলা। আর তাতেই মানবিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন ট্রেনের যাত্রীরা। মা এবং সন্তান সুস্থ আছেন, নিরাপদে ফের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা (Bardhaman News)। 


তিরুবন্তপুরম-শিলচর আরোনাই এক্সপ্রেসে চেপে যাত্রা করছিলেন টেরেসা হাঁসদা নামের ওই মহিলা


রেল পুলিশ সূত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, ১২৫০৭ আপ তিরুবন্তপুরম-শিলচর আরোনাই এক্সপ্রেসে চেপে যাত্রা করছিলেন টেরেসা হাঁসদা নামের ওই মহিলা। আদতে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর থানা এলাকার বাসিন্দা তিনি। যাত্রাপথে ট্রেনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বামী রুবিন মাণ্ডিও। আচমকাই ট্রেনের মধ্যে প্রসববেদনা শুরু হয় গর্ভবতী টেরেসার। কাতরাতে থাকেন তিনি (Baby Delivery)। 


ওই অবস্থায় কী করবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না মহিলার স্বামী রুবিন। ট্রেন তখন বর্ধমান স্টেশনে ঢুকছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ট্রেন থামানোর অনুরোধ জানান তিনি। তাতে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরোনাই এক্সপ্রেসকে থামানো হয়। স্টেশনে দায়িত্বরত অবস্থায় থাকা চিকিৎসক এবং নার্সদের খবর দেওয়া হয়। তাতে দ্রুত ট্রেনের S-১২ নম্বর কামরায় পৌঁছে যান তাঁরা।


আরও পড়ুন: Jalpaiguri News: ভোররাতে সীমান্ত এলাকায় বিধ্বংসী আগুন, তড়িঘড়ি ভুটান থেকে দমকল ছুটে আসায় কিছুটা রক্ষে হল


এর পর ওই ট্রেনের কামরাতেই শিশুসন্তানের জন্ম দেন টেরেসা। সন্তানপ্রসবের পর ট্রেনের কামরায় টেরেসা এবং তাঁর নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্য় পরীক্ষাও হয়। তার পরই ফের ট্রেন ছাড়ে। ওই ট্রেনেই স্বামী এবং সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন টেরেসা। মা এবং সদ্যোজাত সন্তান দু'জনেই সুস্থ ছিলেন।


সকল যাত্রী তো বটেই, স্টেশন কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানান ওই দম্পতি


ট্রেনের কামরায় সন্তানপ্রসবের ঘটনা যদিও নতুন নয়। কিন্তু ট্রেন থামিয়ে, গোটা পর্ব মিটে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার এমন নজির সেভাবে চোখে পড়ে না। তাই সকল যাত্রী তো বটেই, স্টেশন কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানান ওই দম্পতি। শুধু তাই নয়, যেভাবে রেলের তরফে ব্যবস্থাপনা করা হয়, তাতেও অভিভূত তাঁরা। পরিবারের নতুন সদস্যকে নিয়ে হাসিমুখেই রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশে।


এর আগে, গত বছরের শেষ দিকে, হাওড়া স্টেশনের ট্রেনের কামরায় প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন এক মহিলা। রেল পুলিশের কর্মীরা টহল দেওয়ার সময় বিষয়টি দেখতে পান। তার পর জানলা ঢেকে, ট্রেনের মধ্য়েই প্রসবের ব্যবস্থা করেন সকলে মিলে।