আবির দত্ত ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, হাওড়া: তীব্র উত্তেজনা ও পুলিশ-বিজেপি কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে সাঁতরাগাছি স্টেশনের (santragachi station) বাইরে ব্যারিকেড (barricade) খুলে ফেলার কাজ শুরু হল। যান (traffic) চলাচল স্বাভাবিক করতেই ব্যারিকেড ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু এখনও সাঁতরাগাছি স্টেশনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। বিজেপি কর্মীদের জমায়েত সরেনি পুরোপুরি। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কী ভাবে স্টেশন থেকে বাইরে বেরোবেন, সেটাই বড় প্রশ্ন। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে কার্যত স্টেশন চত্বরের দখল নিল আরপিএফ (RPF)। 


উঠছে ব্যারিকেড...
লোহার পাত দিয়ে, ওয়েল্ডিং করে যে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল তা অবশ্য এর মধ্যেই ভাঙার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। অদূরেই নবান্ন। বিজেপি কর্মীদের সেখানে পৌঁছনো আটকাতেই এই বজ্র-আঁটুনির ব্যবস্থা। কিন্তু পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার আগেই কেন খুলে ফেলা হচ্ছে ব্যারিকেড? তা হলে কি যান চলাচল স্বাভাবিক করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী প্রশাসন? নাকি পুলিশের কোনও কৌশল এটি? স্পষ্ট নয়। তবে আপাতত যা খবর তাতে এটা স্পষ্ট যে ব্যারিকেড খোলার প্রক্রিয়া শুরু হলেও যান চলাচল চালু হতে এখনও অনেকটা সময় লাগবে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কম-বেশি সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরেই জমায়েত রয়েছে বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের চারপাশ থেকে ঘিরে রাখার জন্য কি নতুন কোনও নতুন কৌশল ভাবছে প্রশাসন? বলবে সময়। তবে উত্তেজনার আঁচ এখনও যথেষ্ট। হাতে ইট নিয়ে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে। পুলিশ এখন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর। 


উত্তপ্ত সাঁতরাগাছি...
কিছুক্ষণ আগে পর্যন্তও এখানকার ছবিটা অত্যন্ত তেতে ছিল। পুলিশের দিকে ধেয়ে আসছিল একের পর এক ইট। অভিযোগ, ব্যাগে ইটভর্তি করে নিয়ে আসেন বিজেপি কর্মীরা। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশও। লঙ্কাগুঁড়োর শেল ও হ্যান্ডশেলও ব্যবহার করা হয় বলে খবর। দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সাঁতরাগাছি স্টেশন লাগোয়া এলাকা। কিন্তু তীব্র ইটবৃষ্টির মুখে একসময়ে পিছু হঠতে বাধ্য হন পুলিশকর্মীরা। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনের ছবিটিও ছিল ভয়ঙ্কর। বিক্ষোভকারীদের মুখে  একটাই কথা, 'শুভেন্দু অধিকারীকে যত ক্ষণ না ছাড়া আচ্ছে, তত ক্ষণ আমরা চালিয়ে যাব।' রাস্তায় ছড়িয়ে অজস্র পাথর, গার্ডরেল উলটে পড়ে। সর্বত্র বিক্ষোভের ছবি। একসময়ে গোটা এলাকাটাই বিজেপি কর্মীদের ভিড়ে ছেয়ে যায়। তবে তার পরই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এলাকা ছেড়ে দেবেন। এক বিজেপি কর্মীর কথায়, 'আমরা চলে যাচ্ছি না, শুধু আজকের মতো বিষয়টি মুলতুবি করছি। পুলিশ আমাদের সরাতে পারেনি। আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে।'


আরও পড়ুন:"পাওনা আছে, নিশ্চয়ই মার খেতে এসেছিল", তমলুকের ঘটনায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সমর্থন দিলীপের