অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: চা বাগানে ভালুকের (Bear) দাপট। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মাঝেরডাবরি চা বাগানে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল একটি ভালুক। বক্সা বন দফতরের কর্মীরা ভালুকের হানা থেকে বাঁচতে বাগানের ১৩-ডি কম্পার্টমেন্ট ঘিরে রাখে।


বন দফতরের দুই কুনকি হাতি মমতাজ এবং জোনাকির পিঠে চড়ে কালকুট নদীর পার্শ্ববর্তী চা বাগানের মাঝে তল্লাশি চালাচ্ছিল বন দফতর। ভালুকটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে ট্র্যাঙ্কুইলাইজ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে খবর বন দফতর সূত্রে। ভালুকটিকে ধরে রাখতে আনা হয়েছে খাঁচাও। বাগানের এই কম্পার্টমেন্টে কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে ঘুম পাড়ানি গুলি করে ভালুকটিকে কাবু করল বন দফতর। 


আরও পড়ুন: West Burdwan: আতঙ্কের অপর নাম মৌমাছি! দুর্গাপুরে মৌমাছির কামড়ে আক্রান্ত একাধিক


ডুয়ার্সের চা বাগানেও দেখা যায় ভালুক-আতঙ্ক। স্থানীয়দের সতর্ক করতে মাইকে প্রচার শুরু করে বন দফতর। বিশেষ করে শিশুদের নিরাপদে রাখতে চলছে প্রচার। সম্প্রতি ডুয়ার্সের বেশ কয়েকটি চা বাগানে ভালুকের দেখা মেলে। ২৪ নভেম্বর, চালসার মেটেলি চা বাগানে ভালুকের হানায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। পরে ভালুকটিকে পিটিয়ে মারে স্থানীয় বাসিন্দারা। ২৭ নভেম্বর, নাগরাকাটার ভগতপুর চা বাগানে ভালুক দেখতে পান শ্রমিকরা। পরে ভালুকটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজ করে কব্জায় আনা হয়। এর পরের দিন, মালবাজারের সোনগাছি চা বাগানে দেখা মেলে ভালুকের। আতঙ্কে কাজ বন্ধ করে দেন চা শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতে বন দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন বন্যপ্রেমীরা। বন দফতরের দাবি, ভুটান পাহাড় ও নেওড়া ভ্যালিতে প্রবল শীতের কারণে এইসময় বাসাবদল করে ভালুক। বন দফতরের অনুমান, পাহাড়ে নির্মাণকাজ চলায় বাসা তৈরির জায়গা না পেয়ে এত নীচে লোকালয়ে নেমে আসছে ভালুক। বন দফতরের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


কিছুদিন আগে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগতপুর চা-বাগানে ভালুকের আতঙ্ক দেখা যায়। শনিবার সকালে যখন চা-বাগানে কয়েকজন শ্রমিক স্প্রে করার কাজ করছিলেন, ঠিক সেই সময় ভালুকের মুখোমুখি পড়ে যান তাঁরা। ভালুকটি তেড়ে আসতেই তাঁরা স্প্রে-র মেশিনপত্র ফেলে পালিয়ে যান। এরপরেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান খুনিয়া, ডায়না, মাল, বিন্নাগুড়ি, রামসাই, বীরপাড়া সহ বিভিন্ন রেঞ্জের বনকর্মীরা। চলে আসে নাগরাকাটা থানার পুলিশও। গত কয়েকদিন ধরে ওই চা-বাগানে নজরদারি চালাচ্ছিল বন দফতর। শেষপর্যন্ত ভালুকটিকে খুঁজে বের করে ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করে কাবু করতে সক্ষম হয় বন দফতর। দুপুর থেকে চেষ্টা, বনকর্মী থেকে পুলিশের সতর্ক পাহারা। অবশেষে বিকেলে জালবন্দি হয় ভালুক।