ভাস্কর ঘোষ, হাওড়া: শতাধিক বছরের পুরনো পদ্ধতি নয়। নতুন পদ্ধতিতে পরিবেশ বান্ধব ইউরিয়া (Nature Friendly Urea) তৈরি করেছেন বেলুড় মঠের (Belur Math News) রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের গবেষকরা (Ramkrishna Mission)। এই পদ্ধতিতে ইউরিয়া তৈরি করলে বায়ুদূষণের আশঙ্কা নেই বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।


পরিবেশবান্ধব ইউরিয়া তৈরি করে নজির রামকৃষ্ণ মিশনের গবেষকদের


পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে এই ইউরিয়া তৈরি করলেন বেলুড় মঠের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান ও তাঁর সহযোগী গবেষকরা। নাম রেখেছেন গ্রিন ইউরিয়া। মূলত দুই ধাপে, এই ইউরিয়া তৈরি হয়। প্রথম ধাপে শতাব্দী প্রাচীন Haber-Bosch process অনুযায়ী নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেনকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশয়ে প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বায়ুমণ্ডলের ২০০-৪০০ চাপে ধাতব অনুঘটকের উপস্থিতিতে অ্যামোনিয়া তৈরি করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে সেই অ্যামোনিয়া এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হয় ইউরিয়া।


শতাধিক বছরের পুরনো পদ্ধতিতে, বাণিজ্যিকভাবে ইউরিয়া তৈরি করতে প্রচুর তাপের প্রয়োজন হয়। তার জন্য লাগে কয়লা। ইউরিয়া তৈরির সময় প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। যার জেরে হয় বায়ুদূষণ। কিন্তু, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের গবেষকদের দাবি, তাঁদের আবিষ্কার করা পদ্ধতিতে ইউরিয়া তৈরির সময় কোনও তাপের প্রয়োজন হয় না। ফলে, থাকে না বায়ুদূষণের আশঙ্কাও।



এই আবিষ্কার আবিষ্কার জার্মানির একটি গবেষণা পত্রিকায় ছাপার জন্য অনুমোদিত হয়েছে 


বিভাগীয় প্রধান, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের বিভাগীয় প্রধান উত্তমকুমার ঘোড়ই বলেন, "গ্রিন ইউরিয়া তৈরিতে কোনও জ্বালানির প্রয়োজন নেই। যেমন জ্বালানি সাশ্রয় হয়, তেমনই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনও গ্যাসও নির্গত হয় না। উপরন্তু বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করে পরিবেশে তার মাত্রাও কমিয়ে আনা সম্ভব।


গ্রিন ইউরিয়ার আবিষ্কার, আগামী দিনে চাষের জন্য নাইট্রোজেন ঘটিত সারের যোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ইতিমধ্যেই তাঁদের আবিষ্কার জার্মানির একটি গবেষণা পত্রিকায় ছাপার জন্য অনুমোদিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের গবেষকরা।


আরও পড়ুন: South 24 Paragana : পথ সুরক্ষায় জোর, বারুইপুরে অত্যাধুনিক ট্রাফিক সিগনাল ও কিয়স্কের উদ্বোধন