আশাবুল হোসেন, কলকাতা: 'আড়াইটের সময় এসে বলল, এখনই নোটিস নিতে হবে। না হলে কাল দেখিয়ে দেব', অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে  (Abhishek Banerjee) সমন পাঠানো নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে )Press Conference)উষ্মা প্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশ্ন ছিল, মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, যে ভাবে ঘাড় ধরে তাঁকে তোলা হয়েছে, তা কোনও উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করা যায় কিনা? তার প্রেক্ষিতেই উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। বলেন, 'ওরা কী মনে করে? আমরা কি বেগার শ্রমিক?'


আর যা বললেন...
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, 'ইগো-র একটা সীমা থাকে। যা মনে আসে করবেন? এখন তো আমাদের চিন্তা হচ্ছে যে সংবিধান না বদলে দেয়, দেশের নাম না বদলে দেয়।' তৃণমূলনেত্রীর সতর্কবার্তা, এখনও যদি ভারতের মানুষ এই কথাটা না বোঝেন তা হলে গোটা বিশ্ব ক্ষমা করবে না। এদিন মণিপুরের প্রসঙ্গও ছুঁয়ে যান মমতা। বলেন, 'এখনও মণিপুরে রক্ত বইছে। কিন্তু ওদের পার্টির কোনও নেতার সময় হয়নি সাধারণ মানুষের সঙ্গে গিয়ে দুটো কথা বলে আসবেন।' বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য, 'এরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বলে, ওকে আজ গ্রেফতার করব। পরশু এর বাড়িতে ইডি যাবে, ওর বাড়িতে এনআইএ যাবে।' বস্তুত, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আগেও সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সেই আক্রমণই আরও শানিত করেছেন তিনি। বলেছেন, 'গভর্নমেন্ট অফ দ্য এজেন্সি, গভর্নমেন্ট ফর দ্য এজেন্সি, গভর্নমেন্ট বাই দ্য এজেন্সি।' মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সংবিধান বুলডোজার দিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের রায়েরও তোয়াক্কা করে না তারা, অভিযোগ তৃণমূলনেত্রীর। ২০০০ টাকার নোট নিয়ে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি নিয়েও কেন্দ্রের তুমুল সমালোচনা করেছেন মমতা। নোটবন্দির স্মৃতি উসকে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, 'তখনই আমরা বলেছিলাম ২০০০ টাকার নোটের প্রয়োজন নেই। ১ হাজার টাকার নোটে হয়ে যাবে। ৫০০ টাকা, ১০০ টাকার নোট থাকলেই হবে। এখন কী হল?' এর পরই সব অবিজেপি পার্টির উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ, 'যদি একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে থাকে, তা হলে দয়া করে একটিও ভোট বিজেপিকে নয়।'


প্রেক্ষাপট...
অবিজেপি দলগুলির প্রধান ও অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আগেও বৈঠক করেছেন তৃণমূলনেত্রী। গত ২৪ মার্চ কালীঘাটে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি(এস) প্রধান কুমারস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলনেত্রী। পরে ২০ এপ্রিল ভুবনেশ্বরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনচারেক পর, নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদবের সঙ্গেও তাঁর নবান্নে বৈঠক হয়। এর মধ্যে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী। তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে এসে দেখা করে যান সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবও। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, চব্বিশের সাধারণ নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এর মধ্যেই অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের একজোট হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তৃণমূলনেত্রী।  


আরও পড়ুন:হার্ট অ্যাটাকের আগে শুধু শরীরেই নয়, চুলেও আসে এই পরিবর্তন