জয়দীপ হালদার, পাথরপ্রতিমা (দক্ষিণ ২৪ পরগণা): গত বছর লকডাউনের পর থেকেই দুর্যোগ নেমে এসেছিল ভিন রাজ্যে কর্মরত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে। কাজ হারিয়েছিলেন বহু। তারপর ছিল করোনার আতঙ্ক নিয়েই স্বভূমিতে ফেরার তাগিদ। পায়ে হেঁটে ফিরতে চেয়ে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছিল রাস্তায়। কিন্তু ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া বাংলার শ্রমিকদের পিটিয়ে মারার ঘটনা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ বৃদ্ধি রাজ্যে। 


সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ গোপালনগরের বাসিন্দা তিরিশ বছরের পরমেশ্বর ধারাকে হরিয়ানার গুরুগ্রামে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, পরমেশ্বর গত সাত মাস আগে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে হরিয়ানাতে যায়। রবিবার তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে খবর এসেছে গ্রামে। 


এই ঘটনা জানার পর থেকেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। কীভাবে এবং কেন এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে পরিবারটি। এদিকে জানা গিয়েছে  পরমেশ্বরকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুগ্রামে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। এই ঘটনা নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছেন পরমেশ্বরের বৃদ্ধা মা ও প্রতিবেশীরা। পরমেশ্বরের এই মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় পরিবার। এমনকি সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তাঁরা। 


তবে শুধু পরমেশ্বর ধারার মৃত্যু নয়, গত মাস দুয়েক আগে পাথরপ্রতিমার অসিত দাস নামে এক যুবককে দিল্লিতে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। অসিতও পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ভিন রাজ্যের ঘটল। 


প্রসঙ্গত, পাথর প্রতিমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ ভিন রাজ্যে কাজের সূত্রে পাড়ি দেয়। সেখানে পরমেশ্বর ধারের এই মর্মান্তিক পরিণতি ও মৃত্যু কার্যত অন্ধকার নামিয়ে এনেছে পরিবারে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার এই পরিবারের দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের পরমেশ্বর ছিল একমাত্র রোজগেরে ।তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। এই অবস্থায় সংসার কিভাবে চলবে কেউই বুঝে উঠতে পারছেনা। এলাকার মানুষ চাইছে এই অবস্থায় এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াক সরকার।