পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : নাম, বাবার নাম, এপিক নম্বর - সব এক। আলাদা শুধু ঠিকানা আর ছবি। আর এ নিয়েই এখন বেজায় সমস্য়ায় পড়েছেন, বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রী। অভিযোগ, তাঁর এনুমারেশন ফর্ম চলে গেছে সোনারপুর উত্তরের সুব্রত মিস্ত্রী নামে আরেক ভোটারের কাছে। অভিযোগকারীর দাবি, কমিশন বা স্থানীয় থানা কেউই কোনও সাহায্য করছে না।
আরও পড়ুন, জোর কদমে SIR, বাংলাদেশ পালানোর হিড়িক, অনুপ্রবেশকারীর অ্যাকাউন্টেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা !
নিজের নাম, বাবার নাম, এপিক নম্বর, হবহু এক, আলাদা শুধু ছবি, বয়স আর ঠিকানা। নামের গেরোয় এখন বেজায় সমস্য়ায় পড়েছেন, বেহালার বাসিন্দা নিউ আলিপুরের সাহাপুর মথুরানাথ বিদ্যাপীঠ গ্রুপ C কর্মী সুব্রত মিস্ত্রী। অভিযোগ, তাঁর এনুমারেশন ফর্ম চলে গেছে সোনারপুর উত্তরের সুব্রত মিস্ত্রী নামে আরেক ভোটারের কাছে। সরকারি স্কুলে কাজ করেন। প্রতিটা ভোটে ডিউটিতে যান। কিন্তু এবারে বাড়িতে SIR-এর যে নতুন যে ফর্ম সেই ফর্ম আসছে না। পরবর্তীতে অনলাইনে দেখেন নিজের নাম সুব্রত মিস্ত্রি বেহালা পূর্বের তিনি ভোটার রয়েছেন। সেক্ষেত্রে বাড়ির যে ঠিকানা বেহালা বড়িশা তার পরিবর্তে দেখতে পাচ্ছেন ওঁর নম্বর একই রয়েছে কিন্তু বাড়ির ঠিকানা বদলে গেছে। অনলাইনে দেখেছেন সোনারপুর উত্তরের ভোটার হয়ে গেছেন।
অভিযোগকারী সুব্রত মিস্ত্রী বলেছেন, না আমার কাছে SIR-এর ফর্ম আসেনি। তো আমি চেক করতে দেখলাম আমার নামটা সোনারপুর উত্তরে চলে গেছে। আমি তো বেহালা পূর্বের ভোটার। তারপর আবার তিনি বললেন যে আমার ফর্মটি নাকি অলরেডি কে সেবিকা মিস্ত্রি নামে কেউ একজন নিয়ে গেছেন। BLO আমাকে জানালেন যে কোনও একটি গন্ডগোল হয়েছে। BLO নিজে কিন্তু আমার কাছে বলেছেন যে উনি (সোনারপুরের সুব্রত মিস্ত্রী) একটি ব্রোকারের মাধ্যমে এই ভোটার কার্ডটি বানিয়েছেন। এবং তিনি আগে তালদি থাকতেন। এবং তিনি বাংলাদেশি।
গোটা ঘটনায় এখন প্রবল চিন্তায় পড়েছেন বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রীর পরিবার। অভিযোগকারী সুব্রত মিস্ত্রী বলেন,আমি সত্যিই খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কী হবে কিছুই জানি না। প্রতিবছর আমি ভোটার ডিউটিতে যেতাম। যে কারণে বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারিনি।+গতকাল আমি কমিশনে যাই বেহালা পূর্বের অফিসে। তারা সেখানে বলেন, আপনার নামটি সোনারপুর উত্তরে নথিভুক্ত হয়ে আছে। আমরা এখান থেকে কিছু করতে পারব না। তো আমি সত্যিই হয়রান হচ্ছি। কমিশন আমাকে সাহায্য করছে না। আমি থানায় গেছলাম তারাও আমাকে কোনও সাহায্য করছে না।
প্রশ্ন: আপনার যে কার্ডটা এই কার্ডটা কবে থেকে বানানো হয়েছিল?
সুব্রত মিস্ত্রী, সোনারপুর উত্তরের ভোটার : এটা আমার ২০১৭ সালে করা হয়েছে। ক্য়ানিং ...থেকে জমা করে, লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা...
প্রশ্ন: আপনি কি আগে বাংলাদেশে থাকতেন?
সুব্রত মিস্ত্রী, সোনারপুর উত্তরের ভোটার : হ্য়াঁ। আমার জন্ম বাংলাদেশে আমি এখানে ছোটোবেলায় চলে এসেছি।
প্রশ্ন: একই এই যে এপিক নম্বরটা পেয়েছেন এটা, কার্ড নম্বরটা। এটা কাকে দিয়ে, বাংলাদেশ থেকে এসে কাকে দিয়ে বানিয়েছিলেন?
সুব্রত মিস্ত্রী, সোনারপুর উত্তরের ভোটার : কাউকে দিয়ে না। আমরা বিডিও-র থেকে জমা করে করা হয়েছে।
সোনারপুর উত্তর সুব্রত মিস্ত্রীর স্ত্রী সবিতা মিস্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ থেকে ২০১১ সালে এসেছে। কার্ড হয়েছে ২০১৭ সালে। ট্রান্সফার হয়েছে এখানে ২০২৩ সালে।
প্রশ্ন: এই কার্ড কোথা থেকে বানায়?
সবিতা মিস্ত্রী, সুব্রত মিস্ত্রীর স্ত্রী,সোনারপুর উত্তর: এটা ক্য়ানিং থেকে। ওখানে থাকত। ওখান থেকেই।
গন্ডগোল যে হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন BLO। BLO সমীরণকুমার রায় বলেন, হঠাৎ করে বেহালা থেকে ওই ছেলেটা সেম নামের আমাকে ফোন করেছিল। ও বলল যে আমার ফর্মটা আপনার কাছে আছে। তারপর আমি রেজিস্টার খুলে দেখি ফর্মটা অলরেডি উঠে গেছে। আমি আবার সুপারভাইজারকে জানাই। উনি বলল যে ফর্মটা আপনি হোল্ড করুন। ছবিটা আমাদের লোকাল ছেলের ছবি। আমরাও জানি না কী করে হল। যেহেতু ছবিটা ওর বাকি সব সেম তাহলে ফর্মটা ওকেই দিয়ে দিই। সবমিলিয়ে, কীভাবে এই নাম-বিভ্রাটের ঝামেলা থেকে বেরোবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রীর।