সমীরণ পাল,  উত্তর চব্বিশ পরগনা : অন্ধ্রপ্রদেশের বিশ্ববিদ্য়ালয়ে (AP University) রহস্য়মৃত্য়ু হল এ রাজ্য়ের এক পড়ুয়ার। বিশ্ববিদ্য়ালয়ের তরফে দাবি করা হয়েছে, এগারো তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্য়া (suicide) করেছেন ওই ছাত্র। বিশ্ববিদ্য়ালয়ের (University) তরফে দাবি করা হয়েছে, এগারো তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্য়া করেছেন ওই ছাত্র। 


যদিও এমনটা মোটেও মানতে রাজি নয় তাঁর পরিবার। ছেলের মৃত্যুর কারণ র‍্যাগিং-বলেই মনে করছে তারা। খুন, আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনা জানার জন্য সিবিআই তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মৃতের বাবা। যাদবপুরের পড়ুয়ার মতোই সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার কে এল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন সৌরদীপ চৌধুরী। স্বপ্নপূরণ তো হয়-ই-নি।  মা-বাবা হস্টেলে রেখে আসার ৪ দিনের মাথায় বাড়িতে এসেছে ছেলের মৃত্যুসংবাদ। মৃতের বাবা জানিয়েছেন, ১৭ জুলাই, কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করতে মেদিনীপুরের বাড়ি থেকে ছেলেকে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার কে এল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করেন। ২০ জুলাই ফিরে আসেন তাঁরা। ছেলের সঙ্গে একাধিকবার কথা হওয়ার সময়, সে ভালই আছে বলে জানিয়েছিল। 


আরও পড়ুন: যাদবপুরকাণ্ডে চাপ বাড়িয়ে এবার চিঠি জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের


মৃত সৌরদীপের বাবার দাবি, ২৪ জুলাই অর্থাৎ ঘটনার দিন, সকাল ৬টা ও দুপুর দেড়টা নাগাদ ছেলের সঙ্গে কথা হয়। 
এরপর, দুপুর ৩টে ২৭-এ ছেলের মোবাইল থেকে আসা sms-এ লেখা ছিল 'টাটা'। পরের sms ঢোকে ৩টে ৪১ মিনিটে।
যেখানে লেখা ছিল- ভাল থাকবে তোমরা। তখন মেসেজটি দেখেননি তিনি। ৭ মিনিটের মাথায় অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে- ১১ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে সুইসাইড করেছে আপনাদের ছেলে।  


পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর ছেলের হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। FIR দায়েরের জন্য থানায় যেতে চাইলে, সেখানে যে পুলিশ কর্মীরা ছিলেন - তাঁরা সাদা পাতায় অভিযোগ লিখতে বলেন। মৃত পড়ুয়ার বাবার প্রশ্ন, ছেলের মৃত্যু খবর জানাতে কে ফোন করেছিলেন? কেন তাঁদের হস্টেলে যেতে দেওয়া হল না? মৃতের বাবার প্রশ্ন, ৩ দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছিল, তাহলে তাঁর ছেলের পোশাকে কীভাবে কাদা-মাটি লাগেনি? 


তাঁর দাবি, নিরাপত্তারক্ষী জানিয়েছিলেন, দুপুরে সবাই বিশ্রাম নেওয়ায়, কোনও ছাত্র তাঁর সন্তানের মৃতদেহ দেখেনি। 
নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ছেলে ব্য়ালকনি থেকে ঝাঁপ দেয়। অথচ ছেলে যে ঘরে থাকত সেখানে ব্যালকনি ছিলই না। 
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যখন সৌরদীপ ঝাঁপ দেয়, তার হাতে ফোন ছিল। কিন্তু যে ফোন পরিবারের হাতে দেওয়া হয়, ১১ তলা থেকে পড়ার পরও তা অক্ষত ছিল। সৌরদীপ দেহ দেখে মনে হচ্ছিল তাকে মারা হয়েছে বা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।  সন্তান হারানোর শোক মিলিয়ে দিয়েছে নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর আর ভিনরাজ্য অসমকে। তিন পরিবারেরই দাবি এখন একটাই, দোষীরা যেন কঠোর শাস্তি পায়।