রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: নবগ্রামের পর এবার কাঠগড়ায় বহরমপুর থানার পুলিশ। পুলিশের হাত ছাড়িয়ে আটক যুবকের ভাগীরথীতে ঝাঁপ! গতকাল রাতে ভাগীরথী থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। সঙ্গে অভিযোগ, পুলিশই খুন (murder) করেছে ওই যুবককে (youth death)। গোটা ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে জেলা পুলিশ। শনিবার রাতে মিসিং ডায়েরি করা হলেও পুলিশ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি, আরও অভিযোগ পরিবারের। তবে যুবককে আটক করার কথা অস্বীকার করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ (berhampore police station)।



কী জানা গেল?
মৃতের নাম অতনু ঘোষ। পরিবারের দাবি, পাড়ার গন্ডগোলের ঘটনায় ওই কলেজ ছাত্রকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলে মারধর করা হয়। বাঁচার জন্য ভরা বর্ষার ভাগীরথী নদীতে মরণঝাঁপ ২১ বছরের তরুণের, অভিযোগ মৃতের পরিবারের। বহরমপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া অতনু শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই তরুণ। মিসিং ডায়েরি নিতে টালবাহানা করে পুলিশ। ৩০ ঘণ্টা পর, গতকাল ভাগীরথী থেকে দেহ উদ্ধার করেন আত্মীয়রাই। পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে মৃত্যু, দেহ উদ্ধারেও সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। অতনুর পরিবারের দাবি, বহরমপুর থানার সরিদাবাদ ফাঁড়ির পুলিশ অতনুকে আটক করে। আচমকাই তিনি পুলিশের হাত ছাড়িয়ে দৌড়তে শুরু করলে, যুবককে ধাওয়া করা শুরু হয়। রাস্তার পাশেই ভাগীরথী নদী। সেই জলেই লাফিয়ে পড়েন অতনু। তার পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজ ছিল না, দাবি পরিবারের। শোনা যায়, যুবক এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তিনিও এই বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারেননি। পরিবারের দাবি, মিসিং ডায়েরি করতে করলেও অসহযোগিতা করে পুলিশ। শেষমেশ ভাগীরথীর চার দিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন অতনুর পরিজনেরাই। এই জন্য স্থানীয় মাঝিদেরও সাহায্য নেওয়া হয়। গত কাল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দেহ উদ্ধার হয়। দেহ ঘাটে নিয়ে আসার পর স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অতনুর পরিবারের লোকজন, সকলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।  দীর্ঘক্ষণ দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁর। বহুক্ষণ পর দেহ উদ্ধার করতে পারে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য অতনুর দেহ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আজ সকালে। যদিও অতনুর পরিবারের দাবি, পুলিশই তাঁদের ছেলেকে খুন করেছে। অপরাধীদের শাস্তি চান তাঁরা। সব মিলিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য বহরমপুরে। নবগ্রামের পরই হেফাজতে মৃ্ত্যুর আরও একটি অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পুলিশও। 

 

নবগ্রামের ঘটনা...
একেবারে হালেই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে পুলিশ লকআপে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগে খুনের মামলা দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। সাসপেন্ডেড ওসি অমিতকুমার ভকত এবং সাব ইন্সপেক্টর শ্যামল মণ্ডলের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচার, জোর খাটিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ানোর চেষ্টার মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নবগ্রামে পুলিশ লকআপে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন অধীর চৌধুরী।