ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, পরিতোষ দাস: বীরভূমে ফের প্রকাশ্যে বিজেপি-র (BJP) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (Birbhum News)। দলীয় বৈঠক চলাকালীন কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার সামনেই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন কর্মীদের একাংশ। যদিও তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুললেন জেলা বিজেপি সভাপতি। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল (TMC)।
ফের একই ঘটনা ঘটল বীরভূমের কীর্ণাহারে। জেলায় ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শনিবার দেখা গেল, মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন দলের রাজ্য-সহ সভাপতি। পাশেই বসে কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা এবং জেলা সভাপতি। শনিবার তাঁদের সামনেই প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেই পোস্টার হাতে সরব হলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। (Anupam Hazra)
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বীরভূমে প্রস্তুতি বৈঠক শুরু করেছে বিজেপি। শুক্রবার সেরকমই একটি বৈঠক চলছিল কীর্ণাহারে।
বৈঠক চলাকালীনই বোলপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে পোস্টার হাতে হাজির হন কয়েকজন বিজেপি কর্মী। তা চোখে পড়তে অনুপম বলেন, "যাঁরা ব্য়ানার বা পোস্টার নিয়ে এসেছেন, এটা ব্যানার বা পোস্টার দেখানোর জায়গা নয়। আপনারা ব্যানার নামিয়ে বসুন। এটা ব্যানার বা পোস্টার দেখানোর জায়গা নয় বস। মিটিং শেষ হোক, কথা বলব আমি।"
আরও পড়ুন: Paschim Bardhaman: সৌজন্যের রাজনীতি, অন্ডালে সিপিএম পার্টি অফিস খোলালেন তৃণমূল জেলা সভাপতি
বৈঠক শেষে অনুপমকে ঘিরে নিজের অভাব অভিযোগের কথা জানান বিজেপি কর্মীরা। এক বিজেপি কর্মী জানান, নানুরে এখনও ৩০-৪০ জন রয়েছেন, যাঁরা ২০২১ সালের ২ মে-র পর থেকে গ্রামছাড়া। তালিকা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই বিজেপি কর্মী জানান, রয়েছে। তাতে অনুপম বলেন, "নানুরের অবস্থা শোচনীয়। যাঁরা আছেন, পুরো রেকর্ট দেবেন এঁরা। চেঞ্চ করার ব্যবস্থা করুন।"
কিন্তু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম যখন বিক্ষুব্ধ কর্মীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন, সেইসময় বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা কর্মীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, "বিক্ষোভটা কৃত্রিম ভাবে করা হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টির লোক হলে, এঁরা এমন করতেন না।"
সন্ন্যাসীচরণের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। বরং নানুরের বিজেপি কর্মী তুফান ভৌমিক বলতে যান, "২০১০ সাল থেকে সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত। চারটি নির্বাচন করে এসেছি..."। তাতে অনুপম বলেন, "যাঁরা পদে থাকেন, সবসময় চান দলের ভাল হয় কী করে। সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে। কোনও লবিবাজি চলবে না। জেলা সভাপতিকে বলব, সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। অন্য় ওষুধও রয়েছে...সেটা দেখা হবে।"
তবে প্রকাশ্যে বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। বীরভূমে তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "সকলেই বুঝতে পারছেন ওদের দলের কী ভাবমূর্তি...।"
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে উঠেপড়ে লেগেছিল বিজেপি। কিন্তু অনুব্রতহীন বীরভূমে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভাল ফল করতে পারেনি তারা। লোকসভা নির্বাচনের আগে এখন বার বার সামনে আসছে গেরুয়া শিবিরের দ্বন্দ্ব।