আবির ইসলাম, বীরভূম: ইতিউতি কয়েকটা গাছ ছড়িয়ে রয়েছে। হাতেই গুনে নেওয়া যাবে কটা গাছ রয়েছে। কিন্তু সেই গাছ লাগাতেই নাকি সরকারি তহবিল থেকে খরচ হয়ে গিয়েছে লাখ দুয়েক টাকা। যে টাকায় গাছ লাগানো হয়েছে, তা এসেছে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে। এর ফলে অভিযোগ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এদিকে, পঞ্চায়েত সচিবের দাবি, বিডিও অফিস থেকে ঠিকমতো গাছ আসেনি। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা পঞ্চায়েতের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন বিডিও।


গোটা জমিতে ঘাস আর আগাছা ছড়িয়ে রয়েছে। সেখানেই মেরেকেটে রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি গাছ। কিন্তু তাতেই নাকি খসে গিয়েছে মোট ২ লক্ষ ২২ হাজার টাকা। সেটা আবার ফলকে লেখাও রয়েছে। এমনই ঘটনা, বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিহিপাড়ায়। বর্তমানে ভেঙে পড়া সরকারি বোর্ডের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সরকারি জমিতে গাছ লাগাতে একশো দিনের প্রকল্পে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ২ লক্ষ ২২ হাজার ২৩৩ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু, এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে গুটিকয়েক গাছ। বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের ডিহিপাড়ার বাসিন্দা ভগীরথ দাস বলেন, 'গাছ লাগানো হয়েছিল। তবে একটাও নেই, দেখাশুনোর অভাবে ছাগল-গরুতে খেয়ে নিয়েছে।'


কত টাকার গাছ:
বিতর্কের মুখে, পঞ্চায়েত সচিব দাবি করেছেন, বিডিওর দফতর থেকে ঠিকমতো গাছের সরবরাহ করা হয়নি। পাল্টা সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও। সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,  '৪৮ হাজার টাকার গাছ লাগানো হয়েছিল। সংখ্যাটা সরকারি বোর্ডে লেখা উচিত ছিল আমাদের ভুল। ঠিকঠাক গাছের সাপ্লাই দেয়নি বিডিও অফিস। গাছ ছাগল, গরুতে খেয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন।'
বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও শেখর সাঁই বলেন, 'পঞ্চায়েত সচিবের দাবি ভুল। ঠিকঠাক সাপ্লাই দেওয়া হয়েছিল। পঞ্চায়েত গাছের দেখাশুনো করেনি। দোষ তাঁদেরই। যতটাকাই ব্যয় হোক সেটা উল্লেখ করা উচিত ছিল।'


প্রশ্ন একাধিক:
গাছ লাগাতে বরাদ্দ ২ লক্ষ ২২ হাজার ২৩৩ টাকা। কিন্তু অত গাছ গেল কোথায়? এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বোলপুর শহর বিজেপির সহ সভাপতি কাঞ্চন ঘোষ বলেন, 'ছাগলে খায়নি। এগুলো তৃণমূলের বড় বড় রামছাগলে খেয়েছে। তাঁদের পকেটে গেছে। এরা দুর্নীতি করে। কেন্দ্রের কাছে প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতি করে। আমরা প্রতিবাদ করব।' বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মিহির রায় বলেন, 'ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওরা সবেতেই দুর্নীতি দেখে। বিষয়টা সত্যি না মিথ্যে তদন্ত করে দেখব।'


আরও পড়ুন: পরপর দুর্ঘটনাতেও ফেরেনি হুঁশ, বৈদ্যুতিক বাতিস্তম্ভে ওত পেতে বিপদ