ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বীরভূম: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সাড়া জাগানো নাম। বীরভূমের (Birbhum News) লাভপুরের (Labhpur News) কথা উঠলে আজও তাঁর জন্মভূমি বলেই মনে পড়ে যায় বইপ্রেমী মানুষদের। তিনি নেই, তবে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Tarasankar Bandyopadhyay) পৈতৃক ভিটিতে আজও তারা মায়ের পুজো হয়। সতী পীঠের অন্যতম লাভপুরের ফুল্লরা মায়ের মন্দিরে প্রথমে পুজো হয়। তার পর তারা মায়ের পুজো শুরু হয় তারাশঙ্করের পৈতৃক ভিটেতে (Diwali 2022)। 


তারাশঙ্করের বাড়িতে আজও পুজো হয় তারা মায়ের


তারাশঙ্করের বাড়ির পুজোয় (Kali Puja), মা দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যারূপে পূজিত হন। তারাশঙ্করের বংশধর, পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, শনিবার রাতের এই পুজোয় অংশ নেন আশেপাশের গ্রাম মিলিয়ে কয়েকশো মানুষ। এ বছর তারাশঙ্করের পৈতৃক ভিটের এই পুজো ১২৫তম বছরে পড়ল। তার জন্য এ বারের পুজো ঘিরে ব্যস্ততা অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশিই। 


তারাশঙ্করের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুরের জমিদার হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন। পরে ফুল্লরা মন্দিরে সাধনা করতে আসা তান্ত্রিক রামজি গোঁসাই হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী প্রভাবতী দেবীকে উপায় বাতলে দেন। নিদান দেন যে, আশ্বিন মাসে দুর্গাদুর্গাপুজো" href="https://bengali.abplive.com/district/kolkata-job-seekers-continue-protest-on-the-very-day-of-laxmi-puja-926138" data-type="interlinkingkeywords">পুজোর পর শুক্লা চর্তুদশীর রাতে দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা মায়ের মায়ের পুজো করতে হবে।


আরও পড়ুন: Job Seekers' Protest : হাতে লক্ষ্মী প্রতিমা, চোখে জল ! চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনমঞ্চে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ !


নিদান মেনে পুজো সারেন হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী প্রভাবতী দেবী। শোনা যায়, তার পরের বছরই জন্ম নেন তারাশঙ্কর। তাঁর জন্মের পরই তারা মায়ের মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করা হয় লাভপুর গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তের একটি মাঠে। সেই থেকে বছর বছর সেখানে পুজো হয়ে আসছে। আজ পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত। 


তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এখানে তারা মা, নীল সরস্বতী রূপে পূজিত হন। বর্তমানে মাঠটি তারামা ডাঙা নামে পরিচিত। নামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এখানে দেবীর গায়ের রঙ নীল। সারা দেহে জড়ানো থাকে সাপ। প্রতিমার পরনে থাকে বাঘ ছাল, মাথায় গেরুয়া জটা, গলায় মুণ্ডমালা এবং হাতে কৃপাণও থাকে।


সাহিত্যিকের লেখায় বার বার ঘুরেফিরে এসেছে এই পুজোর কথা


সন্ধের দিরে পুজো শুরু হলেও, তা চলে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত। পুজোর পাশাপাশি চলে হোম-যজ্ঞও। তারাশঙ্কর যত দিনে জীবিত ছিলেন, তিনি পুজো করিয়ে গিয়েছেন নিয়ম করে। তাঁর লেখা 'গণদেবতা', 'ধাত্রীদেবতা', 'কবি'-সহ বিভিন্ন উপন্যাসে তারা মায়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে বিভিন্ন ভাবে। 


বিগত ৩১ বছর ধরে এই তারা মায়ের পুজো করে আসছেন পুরোহিত সুভাষ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "বংশ পরম্পরায় আমরা এই পুজো করে আসছি। এখানে তারা মা দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা রূপে পূজিত হন। এই পুজো দেখতে আশেপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় জমান বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে।"