ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, নানুর: গরুপাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর অনুপস্থিতিতে উত্তপ্ত নানুর। সেখানে অনুব্রত এবং কাজল শেখের গোষ্ঠীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধল, তাতে তিন জন আহত হয়েছেন। কারও হাত ভেঙেছে, কারও আবার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অতি সম্প্রতিই বীরভূমে সভা করেন তৃণমূল নেত্রী। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে 'কেষ্ট'র পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। তার পরই অনুব্রত এবং কাজল-অনুগামী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধল। এই ঘটনায় কয়েক জনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। হাতও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আহতেরা অনুব্রত গোষ্ঠীর বলে খবর।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। সিউড়িতে মমতার সভায় গিয়েছিলেন অনুব্রতের অনুগামীরা। অভিযোগ, গ্রামে ফিরতেই কাজলের লোকজন তাঁদের উপর চড়াও হন। কেন অনুব্রতর গোষ্ঠী করছেন তাঁরা, প্রশ্ন করা হয়। সেই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় সোমবার। গ্রামে থাকতে গেলে কাজল-গোষ্ঠী করতে হবে বলে ফরমান দেওয়া হয়। সেই নিয়ে ধুন্ধমার বেধে যায় কার্যত।
এর পরই কাজলের লোকজন অনুব্রতর অনুগামীদের বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে একজনের হাত ভাঙে, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় দু'জনের, অভিযোগ অন্তত তেমনই। আহতদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছেন বলে খবর।এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নানুর। লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বোলপুর থানায়। তবে এলাকা এখনও থমথমে।
গত রবিবারই সিউড়িতে সভা করেন মমতা। সেখানে আবারও অনুব্রতর পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। বলেন, "বীরভূমে চক্রান্ত চলছে। কেষ্টকে কতদিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। আমি তো আসতে আসতে দেখছিলাম, তরুণ প্রজন্ম ওর কথা বলছে। আমি কাউকে শিখিয়ে দিইনি। আমি মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। ও কাজ করেছে, ও কাজ করতে জানে।"
তার পর দু'দিনও কাটল না, উত্তপ্ত হয়ে উঠল নানুর। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বীরভূমে তৃণমূলের খুঁটি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে বলে অহরহ শোনা যায়। পাশাপাশি, তৃণমূলের অন্দরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর উঠে আসে প্রায়শই। অনুব্রত এবং কাজলের অনুগামীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ আবারও অস্বস্তি বাড়াল তৃণমূলের।