এরশাদ আলম, দুবরাজপুর: পান থেকে চুন খসলেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন দলের নেতারা। তা রুখতে সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপই বন্ধ করে দিয়েছিলেন জেলা বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। তার পরেও বীরভূমে গেরুয়া শিবিরে (Birbhum BJP) ভাঙন ঠেকানো গেল না। বরং একদিনে সেখানে জেলা কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে দুবরাজপুর (Dubrajpur) শহরের বিজেপি সভাপতি, বুথ সভাপতি-সহ মোট ৩০ জন পদাধিকারী নিজ নিজ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। একই সঙ্গে আসন্ন পৌরসভার নির্বাচন থেকেও নিজেদের নাম তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সকলকে।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে বিজেপি-র জেলা কমিটির সদস্য প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক অনুপ সাহা দলকে তৃণমূলের হাতে বিক্রি করে দিয়েছেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে নিজেদের ইচ্ছা মতো দলকে পরিচালনা করছেন। তার জন্যই পৌরসভা নির্বাচনের আগে একে একে সকলে সরে যাচ্ছেন।’’
বিজেপি-র দুবরাজপুর সহ-সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল বলেন, ‘‘তিন দিন আগে বিধায়ক এবং বর্তমান জেলা সভাপতি বৈঠক করেন। সেখানে একটি নির্বাচনী কমিটি তৈরি হয়। অথচ আমাদের তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। পরে দেখলাম, কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের নাম রয়েছে, যাঁরা কোনও দিন মাঠে-ময়দানে নেমে রাজনীতি করেননি। আমাদের তো মনে হচ্ছে, দলকে হারাতেই পুরনো কর্মীদের সরিয়ে অনভিজ্ঞ লোকেদের নিয়ে আসা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh Update: বিজেপি-তে নিরামিষ-আমিষ সব চলে, শান্তনুদের চড়ুইভাতি নিয়ে বললেন দিলীপ
কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিজেপি-র সেই দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহার বক্তব্য, ‘‘দলীয় নীতি মেনে যারা কাজ করেন, তাঁদের সর্বদা সম্মান দেওয়া হয়। যাঁরা তা মেনে চলবে না, তাঁরা নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমরা কাউকে তাড়িয়েও দিইনি, চলে যেতেও বলিনি। দলে থাকতে হলে দলীয় নীতি মেনে চলতে হবে।’’
বিজেপি-র এই দ্বন্দ্ব নিয়ে তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে এবং অন্য একটা দলের সম্পর্কে কুৎসা রটিয়ে একটা দল দীর্ঘ দিন টিকে থাকতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন এবং অনুব্রত মণ্ডলের সাংগঠনিক প্রভাব ভেঙে ফেলা এত সহজ নয়। আগে হোয়াসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ছিলেন বিজেপি নেতারা, এখন দল ছাড়ছে।’’ বিজেপি থেকে যদি কেউ তৃণমূলে আসতে চান, তৃণমূলে আসতে চাইলে সকলকে স্বাগতও জানান তিনি।