মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূম: প্রথমে শাসকদলের (TMC) নেতার হত্যা, তার পর জতুগৃহে ঝলসে যাওয়া একাধিক দেহ। সব মিলিয়ে সোমবার থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রামপুরহাটে (Rampurhat Fire)। এতার মধ্যেই তৃণমূল নেতার খুনে সন্দেহভাজন এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যেই ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক ঘটনা। সবমিলিয়ে চরম উত্তেজনার পরিবেশ সেখানে। শান্তির আর্জি নিহতের ভাইয়ের।


সোমবার বীরভূমের (Birbhum Fire) রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন এলাকায় তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ (Bhadu Sheikh)। সেখানে তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। ওই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ভাদু শেখের। সেই সমনয় ঘটনাস্থলে যাঁরা ছিলেন, তাদের জিজ্ঞাসাদ করে পুলিশ। তাঁরাই সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।


ভাদু শেখের খুনের ঘটনায় শুরু থেকেই বিজেপি-র দিকে আঙুল তুলে আসছে তৃণমূল। এর আগে ভাদু শেখের দাদাও খুন হন। তাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি জোড়াফুল শিবিরের। বিজেপি যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। কিন্তু ভাদু শেখের স্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশের তদন্তে একেবারেই আস্থা নেই তাঁর।


ভাদু শেখের মৃত্যুর পর থেকেই বকটুই গ্রামের পরিবেশ থমথমে। তা মারাত্মক আকার ধারণ করে সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। মোটর সাইকেলে চেপে সেখানে একদল দুষ্কৃতী চড়াও হয় এবং পর পর বেশ কয়েকটি বাড়িতে আঙুল লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি রাতভর দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায় বলেও অভইযোগ স্থানীয়দের। তাতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, তৃণমূল নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই হামলা চালানো হয়।


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: 'মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখানোর চেষ্টা চলছে', রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শুভেন্দুর


এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে রাজ্য। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যই সত্যিই আগুন ধরানো হয়েছে, নাকি গ্যাস সিলিন্ডার বা স্টোভ ফেটে বিপত্তি ঘটেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছ। এ দিন বিষয়টি নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


রামপুরহাট মেডিক্যাল হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, মোট ন’জনের মৃত্যু হয়েছে, ছয় মহিলা, দুই শিশু এবং এক পুরুষ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দমকল বাহিনী ১০ এবং বীরভূমের সুপার ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, ছ’জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন তিনি। সেই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়। ভাদু শেখের ভাই গ্রামে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন।