শান্তিনিকেতন: শিশুহত্যার ঘটনার আঁচ পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতেও। সেই আবহে শান্তিনিকেতনে গিয়ে তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।  সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। তার জেরে এগোতেই পারলেন না লকেট। গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসতে হল তাঁকে। 


শিশুহত্যার ঘটনায় আজও বিক্ষোভ শান্তিনিকেতনে


পাঁচ বছর বয়সি শিশুকে অপরহণ এবং খুনের ঘটনায় বুধবারও উত্তেজনা শান্তিনিকেতনে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। সেই আবহেই এ দিন দুপুরে সেখানে পৌঁছন লকেট। কিন্তু তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। এর ফলে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। 


কিন্তু স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেন লকেট। তিনি বলেন, "আমরা দাঙ্গা করতে চাই না। কিন্তু এখানে আইনশৃঙ্খলা কিছু নেই।  এই ঘটনায় পুলিশ পুরোপুরি দায়ী। আমাদের আটকানো হচ্ছে। তৃণমূলের গুন্ডা এবং পুলিশ একজোট হয়ে কাজ করছে। বগটুি কাণ্ডে সিবিআই হয়েছে। সেখানে মহিলা-শিশুদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এখানেও হচ্ছে।" তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন করলে লকেট বলেন, "এঁদের দেখতে এখানে আসিনি আমি।"


আরও পড়ুন: Santiniketan Child Murder: শান্তিনিকেতনে শিশুহত্যার আঁচ বিধানসভায়, সিবিআই তদন্তের দাবি বিজেপি-র, মমতাকে নিশানা শুভেন্দুর


তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন এই ঘটনায় কোনও রাজনীতি চান না তাঁরা। লকেটকে ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন করলে, স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "প্রথম দিন থেকে প্রশাসন আমাদের পাশে রয়েছে। বাচ্চাটি মায়ের কোলে জীবিত অবস্থায় ফিরুক, এটাই চেয়েছিলাম আমরা। তা পারলাম না। কিন্তু এতে কোনও রাজনীতির রং চাই না আমরা।"


এ দিকে, বুধবার বিধাবসভার অধিবেশনেও শান্তিনিকেতনে শিশুহত্যার ঘটনা উঠে আসে। অধিবেশনের প্রথমার্ধের শেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ প্রস্তাব পেশ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ। শিশুর মৃত্যু ঘিরে যে ভাবে রহস্য দানা বেঁধেছে, কয়েক দিন পর পড়শির বাড়ি থেকে যে ভাবে শিশুর দেহ উদ্ধার হয়েছে, তা নিয়ে বিবৃতি দিন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। কী ঘটেছে, কারা দায়ী, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে জানাতে হবে তাঁকে। 


বিধানসভাতেও শিশুহত্যার আঁচ


এর পাল্টা বিজেপি-র বিরুদ্ধে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "ঘটনাটি অত্যন্ত খারাপ এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এটা সকলেই বুঝতে পারছেন যে, বিজেপি শুধুমাত্র গন্ডগোল এবং অস্থিরতা তৈরি করতেই এসব করছে। কারণ এর সঙ্গে সার্বিক আইনশৃঙ্খলার কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত রোষ থেকে এমন কুৎসিত ঘটনা যদিও কেউ ঘটান, তার সঙ্গে রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলার সম্পর্ক থাকতে পারে কী করে! যাঁরা এ কথা বলছেন, তাঁরা উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ গুজরাত দেখুন। ঘটনাটি খারাপ। সুস্থ মানসিকতার মানুষ বুঝবেন যে, ব্যক্তিগত আক্রোশ, বিকৃত মানসিকতা থেকে এমন ঘটনা ঘটলে, তা নিন্দনীয়। কিন্তু তা নিয়ে রাজনীতি করলে বুঝতে হবে, গন্ডগোল পাকানোর ইস্যু খোঁজা হচ্ছে।"