আবীর ইসলাম, ইলামবাজার: সরস্বতী পুজোয় (Saraswati Puja) প্রথা ভেঙে পুরোহিতের (Priest) ভূমিকায় দেখা গেল এক আদিবাসী ছাত্রীকে (Tribal girl)। বীরভূমের (Birbhum) ইলামবাজার থানা এলাকার (Ilambazar Police Station) গোপালনগর গ্রামে নজির। রীতি মেনে ঘট ভরা থেকে শুরু পুজোর যাবতীয় আয়োজন করা হয়। ঢাকের বদলে রাখা হয়েছে ধামসা-মাদল। এই পুজোতে সামিল হয়েছেন কচিকাঁচা থেকে শুরু করে গ্রামের সব বয়সের বাসিন্দা।


গোপালনগর গ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত পাড়ায় প্রীতিকণা জানা নামে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj University) আইনের ছাত্রী (Law student) এই গ্রামে নিজের উদ্যোগে আদিবাসী বাচ্চাদের নিয়ে একটি স্কুল তৈরি করেছেন। সেই স্কুলে চলছে আজ সরস্বতী পুজো। এই পুজোতেই পুরোহিতের ভূমিকায় দেখা গেল আদিবাসী ছাত্রীকে।


বাড়িতে রোজকার পুজোর আয়োজনে সাধারণত সামনের সারিতে দেখা যায় মহিলাদের। নিত্যদিনের পুজো করেন তাঁরা ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ্যে যে কোনও পুজোর ক্ষেত্রে তাঁদের খুব কমই দেখা যায়। সমাজ-কালের পরিবর্তন হলেও, মহিলা পুরোহিত প্রায় দেখাই যায় না। আজও কোনও মহিলাকে পুরোহিতের স্থানে বসাতে গিয়ে দু’বার ভাবেন সমাজের বেশিরভাগ মানুষ। তবে সেই সিংহভাগ মানুষের তালিকায় না থেকে নজির গড়ল গোপালনগর গ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের পাড়া।


আরও পড়ুন 'শর্তসাপেক্ষে' খুলল সোনাঝুরি, হাট খুলতেই সেলফির হিড়িক


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন থেকে আট কিলোমিটার দূরে গোপালনগর গ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত পাড়ায় এবারের সরস্বতী পুজোর পুরোহিত হিসেবে দেখা গেল আদিবাসী ছাত্রী চৈতালি মুর্মুকে। রায়পুর সিতিকণ্ঠ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী চৈতালি। তাকেই আজ পুজো করতে দেখা গেল। প্রীতিকণা ও আদিবাসী এই পাড়ার বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আজ চৈতালির সরস্বতী পুজো ঘিরে সকাল থেকেই ছিল চরম ব্যস্ততা। যাবতীয় আচার-আয়োজন সম্পূর্ণ হওয়ার পর পুজোয় বসে চৈতালি। সে পুজো করে খুশি। পাড়ার লোকেরাও প্রথা ভাঙা এই পুজো নিয়ে খুশি।


গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার একটি স্কুলে সরস্বতী পুজোয় পুরোহিত হিসেবে দেখা গিয়েছিল এক মুসলিম ছাত্রীকে। এবার দেখা গেল আদিবাসী ছাত্রীকে। সরস্বতী পুজো ঘিরে এভাবে সামাজিক মেলবন্ধন ও সম্প্রীতির নজির ফিরে আসছে।