গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতীতে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ আন্দোলন অব্যাহত। এর মধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশের পর, আজ থেকে বিশ্বভারতীতে ফের শুরু হচ্ছে ভর্তি প্রক্রিয়া ও কাউন্সেলিং।
উপাচার্যের সামনে পড়ুয়ারা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ভর্তি প্রক্রিয়া ও ফল প্রকাশের কাজ। গতকাল হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিশ্বভারতী নোটিস দিয়ে আজ থেকে ফের ভর্তি প্রক্রিয়া ও ফল প্রকাশের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে, সাত দিন ধরে চলা বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় কলকাতা হাইকোর্টকে। আদালতের নির্দেশে গতকাল উপাচার্যের বাড়ির গেটের তালা ভাঙল পুলিশ। সরানো হয় পড়ুয়াদের অবস্থান-মঞ্চ।
আদালতের নির্দেশের পর, উপাচার্যর বাড়ি থেকে ৫০ মিটার দূরে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন পড়ুয়ারা। এদিন আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সমর্থনে বোলপুরের ডাকবাংলো মোড় থেকে মিছিল করবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
৩ পড়ুয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির বাড়ির সামনে মঞ্চ বেঁধে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। অচলাবস্থা কাটাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন বিশ্বভারতীর অবস্থান-বিক্ষোভ নিয়ে পর্যবেক্ষণে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, এটা কোনও ট্রেড ইউনিয়ন নয়, এটা ছাত্র সংগঠন।
অন্তর্বর্তী নির্দেশে তিনি বলেন, উপাচার্য, শিক্ষক, অধ্যাপক, কর্মীদের বাসস্থান, স্কুল, ক্লাসরুম, প্রশাসনিক ভবন সহ বিশ্বভারতীর যে কোনও অংশের ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও রকম বিক্ষোভ দেখানো যাবে না।
উপাচার্যের বাসস্থান-সহ যেখানে যত তালা ঝোলানো ছিল, শান্তিনিকেতন থানাকে সব তালা ভেঙে দিতে হবে। বিশ্বভারতীর কোনও কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না।
উপাচার্যের নিরাপত্তার জন্য ৩ জন পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করতে হবে। চালু করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা সমস্ত সিসি ক্যামেরা। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে শান্তিনিকেতন থানাকে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে বলে কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালতের রায়ের পরই, শুক্রবার দুপুরে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নিরাপত্তায় ৩ জন পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করা হয়। খুলে নেওয়া হয়, উপাচার্যের বাড়ির সামনে থাকা অবস্থান-মঞ্চ। খোলা হয় ফ্লেক্স-পোস্টার। অবস্থান-মঞ্চ পঞ্চাশ মিটার দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাঙা হয় উপাচার্যের বাড়ির গেটের তালা।