আবির ইসলাম, দুবরাজপুর: বীরভূমের একমাত্র গেরুয়া গড় দুবরাজপুরে ফের বিজেপিতে ভাঙন। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তৃণমূলে যোগ দিলেন একাধিক নেতা ও কর্মী। দল বদলানো নেতাদের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বীরভূমে বিজেপিতে ভাঙন অব্যাহত। দু’দিনে জেলার ৩ জায়গায় দলবদল। খয়রাশোল, রামপুরহাট এবং বোলপুরে পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন বহু নেতা-কর্মী। বিধানসভা ভোটে বীরভূম জেলার ১১টি আসনের মধ্যে শুধুমাত্র দুবরাজপুর আসনটিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। আর সেই গেরুয়া গড়েই আবার ভাঙন। 


রবিবার অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতিতে, বোলপুরে তৃণমূলের জেলা সদর কার্যালয়ে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নেন দুবরাজপুরের এক ঝাঁক বিজেপি নেতা ও কর্মী। তাঁদের মধ্যে স্বরূপ আচার্য ছিলেন বিজেপির দুবরাজপুর শহর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক। পরশুরাম শর্মা ছিলেন দুবরাজপুর শহর মণ্ডলের সহ সভাপতি। প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন দুবরাজপুর শহর মণ্ডলের সোশাল মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। 


এছাড়াও বিজেপির দুবরাজপুর শহর মণ্ডলের একাধিক বুথ সভাপতি এবং যুব ওবিসি ও মহিলা মোর্চার সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। নতুন সাংগঠনিক জেলা কমিটি ঘিরে বীরভূম বিজেপির অন্দরে যে টানাপড়েন চলছে, এদিন তা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে দলত্যাগীদের কথায়। তৃণমূলে যোগদানকারী বিজেপি নেতা  স্বরূপ আচার্য বলেন, "জেলা সভাপতির কাছে আমাদের গুরুত্ব নেই। কাজ করার সুযোগ নেই। নিচুতলার যে কর্মীরা বিধায়ককে জিতিয়েছেন, তিনিও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পছন্দের লোকেদের নিয়ে কাজ করছেন। তাই আমাদের তৃণমূলে যোগদান।"


বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, "উন্নয়ন দেখেই বিজেপি নেতাদের দলত্যাগ। মমতা ব্যানার্জি যা বলেছে সেটাই করে দেখিয়েছে। সবার অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকেছে। এসব দেখেই যোগদান। কীসের জন্য বিজেপিতে থাকবে।" দলত্যাগী নেতাদের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছেন বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি। 


বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, "এতজন কেউ যোগদান করেনি। কয়েকজন মাত্র যোগদান করেছে। আমার আর বিধায়কের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওদের বাড়িতে গিয়েই আমি মিটিং করে এসেছি। এর পিছনে অন্য গল্প আছে। সত্য সামনে আসবে।" জেলা নেতৃত্ব মানতে না চাইলেও, পরপর নেতা-কর্মীদের দলবদলই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বীরভূমে ক্রমেই ভাঙন বাড়ছে বিজেপিতে। পুরভোটের আগে কি এই ভাঙন ঠেকাতে পারবে গেরুয়া শিবির? উত্তর দেবে সময়।