বীরভূম জেলার অন্যতম পর্যটনক্ষেত্র  শান্তিনিকেতন থেকে আট কিলোমিটার দূরত্বে কঙ্কালীতলা। বীরভূম জেলার অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালীতলা। এটা ৫১ পীঠের শেষ সতীপীঠ হিসেবে খ্যাত। জনশ্রুতি সতীর দেহত্যাগের পর শিবের পিঠে থেকে গিয়েছিল কাঁখাল এইখানেই। বলা হয় , এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল কুণ্ড। এখানে নিমজ্জিত আছে নাকি মায়ের কাঁখাল ! 


এই কুণ্ডের ঈশাণ কোণে দেবী সতীর কাঁখাল নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করা হয়। দেবী ছাড়াও কুণ্ডে পঞ্চশিবে অবস্থান । বিশ্বাস, কোমর বা কাঁখাল থেকে স্থানীয় ভাবে দেবীর নাম রয়েছে কঙ্কালী। তবে পৌরাণিকভাবে এখানকার দেবী বেদগর্ভা নামে পরিচিত। প্রচলিত নামানুসারেই এলাকার নাম হয়েছে কঙ্কালীতলা।


ছোট্ট মন্দিরে পাথরের বেদীর ওপর সতীর কালীরূপী এই চিত্রপট। সম্প্রতি একে কাচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।  চৈত্র সংক্রান্তিতেই দেবীর মূল উত্সব হয় এখানে। সেদিন কুণ্ডেই মায়ের পুজো করা হয়। সে সময় মন্দিরকে ঘিরে মেলা বসে। এছাড়া পৌষ সংক্রান্তি ও কৌশিকী অমাবস্যাতেও খুব বড় করে পুজো হয়।





কঙ্কালী মন্দিরের অবস্থান প্রকৃতির মাঝেই । মন্দিরের আশেপাশে আজও বিশাল বনস্পতির সুনিবিড় ছায়া।  খানিক দূরত্বে শ্মশান।  বহু তন্ত্র সাধক সাধনা করে গেছেন এই জায়গায়। এখনও এই মন্দির তন্ত্রসাধনার পীঠস্থান হিসেবে খ্যাত। 


একদিকে যেমন এই জঙ্গলের গা ছমছমে রূপ, অন্যদিকে, মন্দির চত্বরে বসে বাউল-সাধকদের বাঁশির সুর মনকে নিয়ে যায় শান্তির নির্জনতায়। হাজারো শব্দের মায়াজালে আবদ্ধ শহুরে মন মুহূর্তে পৌঁছে যায় কোন সুদূরের পারে। 


এই মন্দিরে ভক্তরা মনস্কামনা জানিয়ে দীপ জ্বেলে কুণ্ড প্রদক্ষিণ করেন। শান্তি নিকেতনে এলে এই মন্দিরে আসেন প্রায় সব দর্শনার্থীই। মায়ের পুজো দেন। সুশৃঙ্খলভাবেই দেওয়া যায় পুজো। কোনও পাণ্ডার দাপট নেই। কড়া বিধি নিয়ম নেই। মনের আনন্দে দেবীপটে হয় পুজো। গাড়ি রাখার সুবন্দোবস্ত রয়েছে। 

আরও পড়ুন :


অমাবস্যার অন্ধকারে নয় ! দিনের আলোয় পূজিতা মালদার জহরা কালী