ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বগটুই : তৃণমূলের বৈঠকে যোগ দিলেন না বগটুই গ্রামে  স্বজনহারা পরিবারে কেউ। বগটুই গ্রামে দলের সংগঠন মজবুত করতে সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করেন রামপুরহাট ১ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। কিন্তু, স্বজনহারাদের কেউ সেখানে ছিলেন না। রামপুরহাটে দলীয় কার্যালয়ে এই বৈঠক করা হয়। বৈঠকে শেষে গ্রামবাসী জানান, আগামী দিনে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, একটা ভুলভ্রান্তি হয়েছে যে বগটুই বিজেপি-তে চলে গেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, আমারা সকলেই তাঁর পাশে আছি।


বীরভূমে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ২১ মার্চ ছিল বগটুই হত্য়াকাণ্ডের বর্ষপূর্তি। প্রথমে তৃণমূলের উপ প্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন। তারপরই শুরু হয় তাণ্ডব। আগুন লাগানো হয় একের পর এক বাড়িতে। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্য়ু হয় ১০ জনের। বেঘোরে প্রাণ যায় মহিলা ও শিশুর। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে, প্রায় গোটা পরিবারকে হারিয়েছেন মিহিলাল শেখ। এই ঘটনার পর বগটুইয়ে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষতিপূরণও দেন তিনি। দিনকয়েক আগে কালীঘাটে বীরভূম নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের সময় তাঁর গলায় শোনা যায় আক্ষেপের সুর। সূত্রের খবর তিনি বলেন, 'ওঁদের জন্য কী করিনি, চাকরি দিয়েছি, ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। সরকারি প্রকল্পে যুক্ত করেছি, তারপরেও অন্য দলের সঙ্গে চলছে'।  


রামপুরহাটের (Rampurhat) বগটুই হত্যাকাণ্ডে (Bogtui Massacre) নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিহতদের পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা করে সাহায্য এবং যাঁদের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের ২ লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কোটা থেকে সংসার চালাতে ১০ জনের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। 


ভয়ঙ্করতম বগটুই হত্য়াকাণ্ডের প্রথম বর্ষপূর্তিতে স্বজনহারাদের বাধার মুখে পড়তে হয়, রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বজনহারাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল দেখা করতে পারলেও, ঢুকতেই দেওয়া হয়নি শাসকদলের স্থানীয় বিধায়ককে।হাড় হিম করা সেই ঘটনার বর্ষপূর্তিতে, তৃণমূল-বিজেপি-সিপিএমের কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল বগটুইয়ে। প্রায় মুখোমুখি দুটি আলাদা শহিদ বেদিও তৈরি করে তৃণমূল ও বিজেপি। বর্ষপূর্তিতে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল করে বিজেপি। তাতে সামিল হন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরাও। অন্যদিকে মহম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে বগটুইয়ে মিছিল করে সিপিএম। তাতে যোগ দেয় কংগ্রেস।