ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বীরভূম: রবিবার ভোরে লাভপুরে কুয়ে নদীর বাঁধ ভাঙল।  ঠিবা পঞ্চায়েতের তালতলা সুইচগেট এর কাছে নদীর বাঁধের বড় অংশ ভেঙে যায়। এর ফলে আশের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেশ কিছু গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে। কয়েক হাজার বিঘা চাষ  জমি এখন জলের তলায়। লাভপুরের কাছে বক্রেশ্বর এবং কোপাই নদী এক সঙ্গে মিশেছে। তার পরেই সেই নদীর নাম হয়েছে কুয়ে।  বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টির ফলে বীরভূমের একাধিক নদীতে জল বাঁড়তে শুরু করেছে। 


ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টি, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে প্রায় ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ল ডিভিসি। প্লাবিত ঘাটাল, হাওড়া, বীরভূম, কাটোয়া, বর্ধমান। মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর ভাঙল ৪টি বাঁশের সেতু। ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া নিয়ে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা মমতার। পুরোটাই ম্যান মেড, নজর রাখতে বলেছি হেমন্তকে, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ। ডিভিসি-র বিরুদ্ধে 'ম্যান মেড' বন্যার অভিযোগ কুণাল ঘোষের। এই ইস্যুতে সোশাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছেন,  'গ্রীষ্মে কৃষি সেচে জল চাইলে দেয় না। ঝাড়খণ্ডে বর্ষায় জল বাড়ে, তখনই জল ছেড়ে বিপদ বাড়ায়। ডিভিসি ফের বাংলাকে বিপদে ফেলছে',সোশাল মিডিয়ায় অভিযোগ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। রাজ্যের অনুরোধে তেনুঘাট থেকে জল ছাড়া কমাল ডিভিসি।  


একটানা ভারী বৃষ্টি। আর তাতে বাড়ল একাধিক নদীর জলস্তর। কোথাও রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হল যোগাযোগ। কোথাও নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে সেতু জলের তলায় চলে গিয়ে স্তব্ধ হল যোগাযোগ। জল জমে গেল একাধিক জায়গায়। প্রবল বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় বিপর্যস্ত হল জনজীবন।  উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি-ভোগান্তি অব্য়াহত। ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে একটানা বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে যায় রেলের সাবওয়ে। জলে থৈ থৈ অবস্থা হয় খনি অঞ্চলের। জল দাঁড়িয়ে যায় দুর্গাপুর পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে। জল জমে যায় আসানসোল, কুলটি ও রানিগঞ্জে।আসানসোল, কুলটি, রানিগঞ্জ, অঝোর ধারার বৃষ্টিতে ভেসে যায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহর। কাটোয়া রোডের ভাতার বাজার, ভাতার ফায়ার ব্রিগেড মোড় ও পাটনা চালকল এলাকায় রাস্তার উপর দিয়ে জল বইতে থাকে। বোলপুর জাতীয় সড়কে আন্ডারপাসের নীচে জল জমে যান চলাচল ব্য়াহত হয়।


আরও পড়ুন,মাটির বাড়ি ধসে মহিলার মৃত্যু বকুলতলায় ! টানা বৃষ্টিতে আহত ৪ নাবালক-সহ এক দম্পতি


সাঁতার কেটে বেহুলা নদী পেরিয়ে, আটকে পড়া একই পরিবারের তিন জনকে উদ্ধার করেন মেমারি থানার এএসআই দীপক পাল। ভারী বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়ার মানকানালী হয়ে রানিগঞ্জ যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তর বেড়ে, জলের তলায় চলে যায় ভাসা সেতু। বাঁকুড়া শহরের সঙ্গে জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একটানা বৃষ্টিতে ছাতনা ব্লকের ডাংরা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেসে যায় জামথোল সেতু। ফলে বাঁকুড়ার সঙ্গে পুরুলিয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে জল জমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় জেলার মেজিয়া এবং সোনামুখীতে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।