ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: রামপুরহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালের মেসবাড়ি থেকে নার্সের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য।জানা গিয়েছে, ওই নার্সের নাম জুলি খাতুন এবং মৃত্যকালীন তাঁর বয়েস হয়েছিল ২২ বছর। তবে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মর্গের সামনে মৃতদেহ রেখে ক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মৃত্যুর খবর কেন দেরি করে জানিয়েছে নার্সিহোমের লোকজন ? রাতে গলায় দড়ি দিয়েছে, সকালে জানায়নি। বেলার দিকে জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ। 


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলি খাতুন-র  বাড়ি বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার তেঁতুলিয়া গ্রামে। তিনি রামপুরহাট হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। মৃতার বাবা সেখ মনির বলেছেন, 'বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনাটি ফোন করে জানানো হয়। খবর পেয়ে আমরা রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এসে দেখি মেয়ের মৃতদেহ সাদা কাপড়ে ঢাকা দিয়ে রাখা হয়েছে।'


মৃতার বাবার আরও অভিযোগ, 'আমার মেয়েকে খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।' বিষয়টি জানিয়ে রামপুরহাট থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। যদিও এখনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।বেসরকারি হাসপাতালে কর্নধার বুবাই দত্ত বলেন, 'আমরা পুলিশ খবর দিই। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। আমরাও চাই, এর সঠিক তদন্ত হোক।'


প্রসঙ্গত, গোটা মৃত্যু ঘটনায় প্রশ্ন উঠে এসেছে, প্রথমত কেন দেরি করে জানানো হয়েছে মৃত্যুর কথা পরিবারকে। যদিও সত্যিই ওই নার্স আত্মঘাতী হয়ে থাকেন, তাহলে তার পাশে পড়ে ছিল কি কোনও সুইসাইড নোট ? নাকি মৃত্য়ুর আগে কোনও গোপন কথা সে কাউকে বলতে চেয়েছিল। এখনও এই ঘটনায় কোনও নতুন তথ্য সামনে আসেনি। তবে মাত্র ২২ বছর বয়েসে নার্সের মৃত্যু ঘিরে পরিবার প্রশ্ন তুলতেই, রহস্য দানা বেধেছে। 


আরও পড়ুন, 'সর্বোচ্চ ডেঙ্গি আক্রান্ত' জেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তালা !


তবে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়। বারবার এমন মর্মান্তিক ঘটনা উঠে এসেছে রাজ্যে। অনেকক্ষেত্রেই ময়না তদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গলা দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা ঘটনায়, মৃতের গলাতেই কোনও দাগ ছিল না। এবং পরে বরং অন্য তথ্য সামনে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে ময়নাতদন্তই প্রকৃত সত্য তুলে ধরবে। প্রকৃত ঠিক কীভাবে ওই নার্সের মৃত্যু হয়েছে, মৃতার বাবার অভিযোগ সত্যি কিনা, তা অবশ্যই সময় জানান দেবে।