ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, নানুর : নানা জল্পনা, নানা চর্চায় জল ঢেলে দিনকয়েক আগে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন কাজল শেখ। বোলপুরে তৃণমূলের জেলা অফিসে অনুব্রত-কাজল বৈঠক হয়। অনুব্রত বাড়ি ফেরার ৫ দিনের মাথায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বীরভূমের জেলা সভাধিপতি। কিন্তু, কোন পথে গড়াচ্ছে বীরভূমের তৃণমূলী রাজনীতি তা নিয়ে নানা চর্চা চলছে। এই আবহে এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন কাজল শেখ ঘনিষ্ঠ নেতা।
বীরভূম জেলা কোর কমিটি না জেলা সভাপতি পরিচালনা করবেন সেই বিতর্কের মাঝে কোর কমিটি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন নানুর ব্লকের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। তিনি নানুরের বাইতার গ্রামে দলীয় বৈঠকে বলেন, "বীরভূম জেল পরিচালিত হবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কোর কমিটি করে দিয়েছেন। সেই কোর কমিটির এক এক জন সদস্যকে দু'টো তিনটে করে বিধানসভার দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই বিধানসভাগুলো সেই নির্দিষ্ট লোকই দেখবেন। নানুর বিধানসভা দেখভাল করার জন্য সাংগঠনিক, প্রশাসনিক সমস্ত দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন কাজল শেখকে। কাজল শেখ আমাদের নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন কাজল শেখ নেতা , ততক্ষণ পর্যন্ত অন্য কে হরিদাস পাল, কে রাম-রহিম এখানে এলে আমরা দেখব না। আমাদের নেতা কাজল শেখ এটাই আমরা মেনে নেব। যাঁরা এখন তৃণমূলে আছেন, আমি জানি একটু অসুবিধা হচ্ছে। এমন এমন কথার বিষ আপনাদের কানে ঢুকছে কান, মন সব চনচন করে উঠছে। ভাই একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। যাঁদের বাজে কথা বলা স্বভাব তাঁদের মুখ থেকে ভাল কথা শুনতে পাবেন না। এটা যদি আশা করে থাকনে সেট আপনাদের ভুল। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব কাছাকাছি কাজল শেখ পৌঁছে গিয়েছেন। তার কারণ একটাই, ২০১১-র পর থেকে যদি নির্বাচনগুলো খতিয়ে দেখেন তাহলে ২০২৩ নির্বাচন এবং ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সময় কাজল শেখ যখন জেলার দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন তখন বীরভূমে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও অশান্তি ঘটেনি। এই কাজের জন্য কাজল শেখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন।"
এই বিষয়ে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসী চরণ মণ্ডল বলেন, ওঁদের কাছে বিবেক, আদর্শ- এর কোনও দাম নেই। তৃণমূলে যে বাহুবলী হবে সে শের হবে, সেই নায়ক হবে। বাকি পদের মান মর্যদা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে নেই। বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে তৃণমূলের ন্যায় নীতি বলে কিছু নেই। ওদের কাছে একটাই কাটমানি, দুর্নীতি যে যত বেশি করবে তিনিই তৃণমূলের নেতা বলে পরিচিত হবেন, দায়িত্ব যাই থাক না কেন।
তৃণমূলের একটাই উদ্দেশ্য, বালি, পাথর, কয়লা দুর্নীতি। আড়াই বছর অনুব্রত মণ্ডল জেলে ছিলেন। সেই সুবাদে জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের নেতৃত্বে কোর কমিটি বীরভূম নিয়ন্ত্রণ করেছে। সেটা দুর্নীতি বলুন, কাটমানি বলুন উনি খেলেছেন। এখন অনুব্রত চলে এসেছেন তাই কার হাতে থাকবে এই কাটমানি, দুর্নীতির টাকা কার হাতে আসবে। তাই কাজল শেখ অনুব্রত মণ্ডলের লড়াই চলছে।