ঋত্বিক মণ্ডল, নানুর(বীরভূম) : পুজোর আর মাত্র কিছুদিন বাকি। কিন্তু তার আগেই অজয় নদের বাঁধ ভেঙে বিপত্তি। জলের তলায় নানুরের (Nanur) নিচু এলাকা। জলের তোড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বিঘের পর বিঘে ফসল। চাষের জমি ভেসে যাওয়ায় মাথায় হাত কৃষকদের।


এদিকে, বীরভূমের নানুরে বাসাপাড়া এলাকায় বহু গ্রামে জল ঢুকেছে। সুন্দরপুর, বাসাপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। বাসাপাড়া বাজার এলাকায় বাড়ি ঘর, দোকান জলমগ্ন। এই পরিস্থিতিতে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। ঝাড়খণ্ডের শিকাটা ড্যাম থেকে জল ছাড়ার কারণেই এই বিপত্তি বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে দাবি। এদিকে স্থানীয়দের দাবি, এই জল নামতে ১০ দিন লাগবে।


আরও পড়ুন ; হু হু করে ঢুকছে জল, চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে চাষের জমি, নষ্ট বিঘের পর বিঘে ফসল


গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাজ্যের জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। অজয়ের ভয়াল স্রোতে বানভাসি পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা। আউশগ্রাম থেকে মঙ্গলকোট, যেদিকে দুচোখ যায়, শুধু জল আর জল। ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন অসংখ্য মানুষ। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে শিলাবতী, ঝুমি নদী। প্লাবিত ঘাটালের একাধিক গ্রাম, ভাঙল বাড়ি। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্লাবন পরিস্থিতির জেরে সবং, পিংলা ও ডেবরার একাংশ জলমগ্ন। জলের তলায় চাষের জমি। দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত। কংসাবতীর জল ঢুকল মেদিনীপুর পুরসভার একাংশেও। 


ডিভিসি-র ছাড়া জলে জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গতকালই ফের একবার ম্যান মেড বন্যার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যদি বৃষ্টির জন্য আমাদের বন্যা হত, তাহলে আমরা এটা বুঝতাম, যে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। সেটাকে আমরা সামলাচ্ছি। কিন্তু, বন্যা তো আল্টিমেটলি হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যান মেড ফ্লাড।


এই পরিস্থিতিতে এদিন দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, আকাশ পথে প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। নামবেন আরামবাগের দৌলতপুরে হেলিপ্যাডে। মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার আগেই তাঁর নির্দেশে দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন একাধিক মন্ত্রী। বাঁকুড়ায় যাচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমানে অরূপ বিশ্বাস, হুগলিতে ফিরহাদ হাকিও ও বেচারাম মান্না এবং মেদিনীপুরে থাকবেন মানস ভুঁইয়া।