নান্টু পাল, বীরভূম: কাপড়ে বেঁধে চালের বস্তায় সাড়ে ৬ ভরি সোনার গয়না রেখেছিলেন স্ত্রী। জানতেন না স্বামী। আর স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সেই চাল ওজনে বিক্রি করে দেন স্বামী। বাড়ি ফিরে চালের বস্তা দেখতে না পেয়ে স্ত্রীর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের (Birbhum) রামপুরহাট থানার হরিওকা গ্রামে।


চালের বস্তায় রাখা সোনার গয়নার থলি-


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের রামপুরহাট থানার হরিওকা গ্রামের বাসিন্দা অপর্ণা মণ্ডল। একই গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি ও বাপেরবাড়ি। অপর্ণা দেবীর স্বামী কুমুদ রঞ্জন মণ্ডল পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে গ্রামের একটি অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাঙ্কের লকারে থাকা সোনার গয়না বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। অনুষ্ঠান শেষে সেই গয়না ফের লকারে রেখে দেওয়ার কথা। কিন্তু তারই মধ্যে কর্মসূত্রে মেদিনীপুরের খড়গপুরে থাকা বড় ছেলের সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন অপর্ণা দেবী। তাঁরা জানাচ্ছেন, মে মাসের ১ তারিখ সেখান থেকে হরিওকা গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু তারই মধ্যে ফের বাবার বাৎসরিক কাজের জন্য বাপের বাড়িতে যেতে হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার বাপের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন অপর্ণাদেবী। বাড়ি ফিরেই একজন ভিক্ষুককে চাল দিতে গিয়ে অপর্ণা দেবী দেখেন সোনার গয়নার থলি রাখা চালের বস্তা নেই। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁর।


আরও পড়ুন - Birbhum: দুবরাজপুরে পারিবারিক বিবাদ, ভাইপোকে খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত কাকা


অপর্ণা দেবীরা জানাচ্ছেন, বাড়িতে ফিরে তিনি যখন দেখেন সোনার গয়না রাখা চালের বস্তা নেই, তিনি কান্নাকাটি করতে শুরু করেন। স্ত্রীর কান্না শুনে ছুটে আসেন স্বামী। স্ত্রীর কাছ থেকে সোনার গয়না রাখার কথা জানতে পেরে তিনিই জানান যে তিনিই এক ফেরিওয়ালাকে চাল বিক্রি করেছেন। এরপরই সেই ফেরিওয়ালাকে ডেকে পাঠান কুমুদ রঞ্জন বাবু। ফেরিওয়ালা তাঁদের জানান যে তিনি এক আড়তদারের কাছে সেই চাল বিক্রি করেছেন। ফেরিওয়ালাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের অদূরে শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে আড়তদারের বাড়িতে যান তাঁরা। সেখানেই হারিয়ে ফেলা গয়না ফিরে পান। জানা গিয়েছে, শুক্রবার অর্থাৎ আজ আড়তদার বরকত আলি অপর্ণাদেবীর হাতে গ্রামের লোকের সামনে সোনার গয়নার থলি তুলে দেন। আড়তদারের মানবিক ব্যবহারে গর্বিত গোটা গ্রাম। গয়না ফিরে পেয়ে হাসি ফুটেছে অপর্ণা দেবীর মুখেও।