ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বালি চুরি আটকাতে গিয়ে বিএলআরও ও কর্মীদের উপর দুষ্কৃতী হামলার (Attacks) ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীরভূমের ময়ূরেশ্বর (Birbhum) । ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে, সাঁইথিয়া-বহরমপুর রাজ্য সড়কের উপর। ওই পথে পণ্যবাহী গাড়িগুলির উপর নজরদারি চলছিল। বালি-পাথরের গাড়িতে সঠিক চালান দিয়ে সঠিক পরিমাণ সামগ্রী বহন করা হচ্ছে কিনা, তার তদন্ত চালাচ্ছিল জেলা প্রশাসনের একটি ভিজিল্যান্স দল । সেখানেই একদল দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হন ভূমি দপ্তরের বেশ কয়েকজন। ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, বালি-পাথরের গাড়ি রাতের অন্ধকারে চালান না কেটে পারাপার করছে। অভিযাগ পরে বীরভূম জেলা প্রশাসন তৎপর হয়। গাড়িতে চালান ও ওভারলোড পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট দল তৈরি করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই দলে থাকা দুবরাজপুর ব্লক ভূমি আধিকারিক উত্তীয় চন্দ্র-সহ বেশ কয়েকজন ভূমি দপ্তরের কর্মী, রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকরা সোমবার রাতে সাঁইথিয়া-বহরমপুর রাজ্য সড়কে অভিযান চালাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় একটি বালি ভরতি ডাম্পার বিনা চালানে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তাকে ওই রাস্তায় থাকা পেট্রল পাম্পের সামনে আটক করেন আধিকারিকেরা। তা নিয়ে চালকের সঙ্গে বচসা হয়। ডাম্পারটিকে পাম্পের মধ্যে নিয়ে গিয়ে রাখে ভিজিল্যান্স দল।
অভিযোগ, তখনই জনা ২০ লোক লাঠি, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ চালায়। তাঁদের আক্রমণে ব্লক ভূমি আধিকারিক-সহ ভূমি দপ্তরের বেশ কয়েকজন জখম হন। ভাঙচুর চালানো হয় সরকারি গাড়িটিতেও। রাত্রে ময়ূরেশ্বর থানার পুলিশ অভিযুক্ত বালি ভরতি ডাম্পারটি বাজেয়াপ্ত করেছে। আটক করা হয়েছে তিন জনকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি ট্রাকের নম্বর অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ময়ূরেশ্বরে থানার পুলিশ ৩জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
সম্প্রতি পানিহাটি-উত্তরপাড়ার মাঝখানে গঙ্গা থেকে দিনে-দুপুরে বালি চুরির অভিযোগ ওঠে। মাঝ নদীতে নৌকা দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। তারপরে সেই বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কামারহাটিতে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা ঘাটে বালি নামানোর কাজ চলছে নিয়মিত। উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসকের কাছে বালি চুরির অভিযোগ করেছে। পোর্ট ট্রাস্ট, সেচ দফতর ও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে ব্যারাকপুর ও চন্দননগর কমিশনারেটেও। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসক।
আরও পড়ুন, 'বাঘ তো খাঁচাতেই থাকবে, নচেৎ জঙ্গলে', অনুব্রতকে খোঁচা সুজনের
মাঝ গঙ্গায় সারি সারি নৌকা। কিন্তু সবগুলিই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। দেখা যাচ্ছে, নৌকার ভিতরে রয়েছে প্রচুর বাঁশ। বাঁশের মাথায় বাঁধা লোহার বালতি। সেই বালতি ডুবিয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীর জলে। তারপর বালতি ভর্তি করে তুলে আনা হচ্ছে বালি। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি ও হুগলির উত্তরপাড়ার মাঝে গঙ্গা থেকে এভাবেই বালি চুরি চলছে অবাধে।