ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বালিঘাটের দখলকে কেন্দ্র করে গত ৫ নভেম্বর বীরভূমের সিউড়ির বাঁশজোড় গ্রামে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মারা গিয়ে ছিলেন শেখ ফাইজুল(২০)। মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় (Birbhum TMC Clash) । শুরু হয় ব্যাপক বোমাবাজি। বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটে। গ্রেফতার হয় ওই গ্রামের তৃণমূল নেতা কাজল সেখ ও তাঁর অনুগামীরা।


পুলিশ তদন্তে প্রায় ১৩ দিন পর এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত  জিয়ারুল সেখকে গ্রেফতার করল সিউড়ী থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফাইজুলের সঙ্গে ঝামেলা ছিল জিয়ারুলের। ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফাইজুলকে পুকুর পাড়ে যাতে দেখে খুনের প্ল্য়ান বানায় সেখ জিয়ারুল। হঠাৎ করে পিছন থেকে কাঁচি নিয়ে ঘাড়ে প্রথম হামলা চালায়। ফাইজুল পড়ে গেলে দেহে এলোপাথারি কাঁচির কোপ দেয়।  আজ তাকে সিউড়ী আদালতে তোলা হবে।


মাত্র কয়েক মাস বাকি পঞ্চায়েত ভোটের। তার আগে ফের রক্ত ঝরল বীরভূমে। সোমবার গ্রাম দখল ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সাঁইথিয়ার বহরাপুর গ্রাম। সংঘর্ষে হল বোমাবাজি, উড়ল নাবালকের হাত-পা, আরও একজনের পা। আহতদের নাম শেখ সাদ্দাম ও শেখ মুজাফ্ফার। সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও কার্যকরী ব্লক সভাপতি ঘনিষ্ঠদের মধ্যে লড়াই। সিউড়িতে খুনের ৭ দিন পেরোতে না পেরোতেই এবার সাঁইথিয়ায় বোমাবাজি, আহত ২। বোমাবাজিতে পা উড়ল তৃণমূলের কার্যকরী ব্লক সভাপতির অনুগামীর। 


ঘটনায় সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠল। ‘সবাই অনুব্রত হতে চাইছে, বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা কমিটির এক নেতা। দু’পক্ষই তৃণমূল, নিয়ন্ত্রণ নেই ব্লক সভাপতির, জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’ সংঘর্ষের জন্য ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধেই অভিযোগ তৃণমূলের কার্যকরী ব্লক সভাপতির। সাঁইথিয়ায় পুলিশের সামনেই বোমাবাজি ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া নেই তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের।


 স্থানীয় সূত্রে দাবি, তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লকের সভাপতি সাবের আলি খান ও তাঁর অনুগামী শেখ সুকুর এবং সাঁইথিয়া ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ও বনগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তুষার মণ্ডলের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। পঞ্চায়েতের কাজের দায়িত্ব কাদের দখলে থাকবে, সে নিয়ে সম্প্রতি গণ্ডগোল চরমে ওঠে। অভিযোগ, সোমবার বিকেলে আচমকা, তুষার মণ্ডলের অনুগামীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে সাবের-সুকুর গোষ্ঠীর লোকজন। বিস্ফোরণে পা উড়ে যায় তৃণমূল কর্মী শেখ সাদ্দামের। গুরুতর জখম হয় এক নাবালক।